আরেক আঁকিয়ে

ফাহিম আঞ্জুম। ছবি: আকিব আরেফিন
ফাহিম আঞ্জুম। ছবি: আকিব আরেফিন

ফাহিম আঞ্জুম নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি সাহিত্যে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। কার্টুনিস্ট হিসেবে ক্যাম্পাসে তাঁকে অনেকেই চেনেন। ছোটবেলায় একটু গম্ভীর ছিলেন, কারও সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। ছেলে অলস হয়ে যেতে পারে ভেবে মা হাতে কাগজ আর পেনসিল দিয়ে আঁকতে বসিয়ে দেন। সেই প্রথম দিনেই নাকি তাঁর মা লক্ষ করেন, পেনসিল-কাগজের সঙ্গে রুম্মানের একটি গভীর যোগাযোগ আছে।

সেই থেকেই ফাহিমের কার্টুন আঁকার শুরু। মাইটি পাঞ্চ স্টুডিওর সুপারহিরো কমিক সিরিজ ‘সাবাশ’-এ দ্বিতীয় থেকে অষ্টম পর্ব পর্যন্ত এঁকেছেন। তা ছাড়া কিছু দৈনিক পত্রিকায় তাঁর আঁকা ছবি ছাপা হয়েছে। সব মিলিয়ে ফাহিমের আঁকা কমিক বইয়ের সংখ্যা ১০।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে নৃবিজ্ঞান পড়ানো হয়। সেখানকার একজন শিক্ষক যখন ক্লাসে ‘সাবাশ’ (নতুন আর্টফর্মের অংশ হিসেবে) পড়িয়েছিলেন, ফাহিমের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা নাকি এই খবর ফোন করে জানিয়েছিলেন ভীষণ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে। নুহাশ হুমায়ূনের ৭০০ টাকা নামে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পোস্টারও করেছেন ফাহিম। কমিকনের আর্ট কম্পিটিশনে তিনবার হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন। সেখানে তাঁর স্টলও থাকে। বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে অ্যানিমেশনের চরিত্রের নকশার কাজও করেছেন। ফাইন্ডিং বাংলাদেশ নামে একটি তথ্যচিত্রে তাঁর আঁকা ছবি দিয়ে অ্যানিমেশন করা হয়েছে।

ভবিষ্যতে নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত কার্টুনিস্ট হিসেবে দেখতে চান তিনি। উপনিবেশবাদ নিয়ে কার্টুন আঁকার কাজে হাত দিয়েছেন। মানে বুঝলেন না তো? সহজ কথায়, ইতিহাসের মতো গুরুগম্ভীর বিষয়কে তুলে আনতে চান কমিক বুকে। জানতে চাইলাম, কার্টুনময় এই জীবনে ইংরেজি সাহিত্যের স্থান কোথায়? উত্তর এল, ‘উপনিবেশবাদ সবচেয়ে ভালো পড়ানো হয় ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে। তাই বিষয়টি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমার বিভাগ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। কার্টুনকে আমরা কেবল শিশুতোষ, হালকা বা মজার বিষয় ভাবি। যেটি মোটেও ঠিক না, বরং অনেক ক্ষেত্রেই একটি সাধারণ ছবির চেয়েও একটি কার্টুনের অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী বার্তা, ভাবগাম্ভীর্য ও তাৎপর্য থাকে।’

কার্টুন নিয়ে তাঁর স্বপ্ন অনেক। তিনি চান, বাংলাদেশের কমিক বুক যেন পরিচিতি পায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।