ক্রীড়ার মঞ্চে ৬৫ বিশ্ববিদ্যালয়

এই উচ্ছ্বাস ছিল প্রতিযোগিতার চেনা দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
এই উচ্ছ্বাস ছিল প্রতিযোগিতার চেনা দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

‘নিজেদের ক্যাম্পাসে তো আমরা প্রায়ই বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলি। তবে এই প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় আকর্ষণীয় দিক ছিল অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে, পরিচয় হয়েছে। এটাই সবচেয়ে ভালো লাগল।’ বলছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উজ্জ্বল চন্দ্র সূত্রধর।

পোলার আইসক্রিমের পৃষ্ঠপোষকতায় সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু আন্তবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্প ২০১৯’–এ সেরা পুরুষ ক্রীড়াবিদের স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। গত ২৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উজ্জ্বলের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘বঙ্গবন্ধুর চেতনায় গড়ি মাদকমুক্ত বাংলাদেশ’ স্লোগানে ২৯ মার্চ শুরু হওয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন ৬৫টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২ হাজার ৬৬৫ জন শিক্ষার্থী।

প্রতিযোগিতায় ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, বাস্কেটবল, সাঁতার, অ্যাথলেটিকসসহ নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিল। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে একেকটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে, আর এই সুযোগে উৎসবমুখর হয়েছে একেকটি ক্যাম্পাস। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পেঙ্গুইন শুটআউট চ্যালেঞ্জ’ নামে একটি ভিডিও গেমস প্রতিযোগিতাও আয়োজন করেছিল পোলার।

শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে তারা যেন সুস্থ বিনোদন পায়, সেই উদ্দেশ্যেই এই প্রতিযোগিতার শুরু। ২৯ মার্চ প্রধান অতিথি হিসেবে আয়োজনের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও ‘বঙ্গবন্ধু আন্তবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্প ২০১৯’–এর উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি মো. জাহিদ আহসান রাসেল।

প্রতিযোগিতা থেকে বিভিন্ন ইভেন্টে পদক অর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ৫টি ক্যাটাগরির ব্যাডমিন্টন ফাইনালে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি দুটি স্বর্ণপদক এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় একটি করে স্বর্ণপদক জয় করেছে। বাস্কেটবলে স্বর্ণপদক পেয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। পুরুষ ও নারীদের ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্ণপদক পেয়েছে যথাক্রমে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ও গণবিশ্ববিদ্যালয়। টেবিল টেনিসের পুরুষ এককে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নারী এককে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, পুরুষ দ্বৈত ক্যাটাগরিতে সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়, নারী দ্বৈত ক্যাটাগরিতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও মিশ্র দ্বৈত ক্যাটাগরিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়। নারী ও পুরুষ ফুটবলে স্বর্ণপদক পেয়েছে গণবিশ্ববিদ্যালয়।

সেরা পুরুষ ক্রীড়াবিদ উজ্জ্বল চন্দ্র সূত্রধর স্নাতক করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিষয়ে। অন্যদিকে সেরা নারী ক্রীড়াবিদের স্বীকৃতি পাওয়া তামান্না আক্তার পড়ছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে, ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে। বিভিন্ন ইভেন্টে মোট ৫টি স্বর্ণপদক জিতেছেন এই অ্যাথলেট। জাতীয় পর্যায়ে খেলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে খেলতে নেমে কি প্রতিপক্ষদের দুর্বল মনে হলো? প্রশ্নের উত্তরে তামান্না বলেন, ‘মোটেই না। আমি কখনোই প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখি না। সেটা যেই প্রতিযোগিতাতেই হোক না কেন।’ তামান্নার শেষ কথাটা মিলে গেল উজ্জ্বলের সঙ্গে। তামান্না বলছিলেন, ‘সারা দেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এসেছে। সবার সঙ্গে দেখা হয়েছে। এটা খুব ভালো লাগল। ভবিষ্যতে এই আয়োজন আরও বড় করে হওয়া উচিত।’

আয়োজকদের পক্ষ থেকে আরও বড় আয়োজনের ইচ্ছের কথা বললেন পোলারের বিপণন ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল মামুনও। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যেসব তরুণ ভালো খেলছে, এরাই হয়তো ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। আইসক্রিমের ব্র্যান্ড হিসেবে পোলার যেহেতু সব সময় তরুণদের সঙ্গে কাজ করতে চায়, তাই এই আয়োজনের সঙ্গেও আমরা দীর্ঘ মেয়াদে থাকতে চাই।’