গবেষণাই যাঁদের কাজ

ইউডা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাবের কয়েকজন সদস্য
ইউডা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাবের কয়েকজন সদস্য

‘গবেষণা নিয়ে কাজ করছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন ক্লাবের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এই ধারণা থেকেই ভেবেছিলাম, নতুন কিছু করব।’ বলছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের (ইউডা) ফার্মাসি বিভাগের প্রভাষক এবং ইউডা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাবের উপদেষ্টা মো. সোহেল রানা। ২০১৮ সালে ক্লাবটি যাত্রা শুরু করে। বয়স খুব বেশি না হলেও কাজে-কর্মে তারা বেশ সরব। কেমন করে এই ক্লাব গড়ে উঠল, কী তাদের লক্ষ্য, সে গল্পই শুনছিলাম আমরা।

ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের ফার্মাসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে ইউডা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাব। কথা হয় ফার্মাসি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং ইউডা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাবের উদ্যোক্তা নাফিউজ্জামানের সঙ্গে। ইউডার প্রাক্তন এই ছাত্র যুক্তরাষ্ট্রের হাউস্টন মেথোডিস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক। তাঁর সঙ্গে কথা হলো ই–মেইলে। নাফিউজ্জামান বলেন, ‘দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রিসার্চ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা খুবই কম। কীভাবে একটা জার্নাল পড়া শুরু করতে হবে, কী করে তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করতে হয়—এই বিষয়গুলো আমরা শিক্ষার্থীদের জানাতে চেয়েছি। তাঁদের বলি প্রথমে সহজ একটি নিবন্ধ বেছে নাও, এই নিবন্ধ থেকে কী কী জানলে, তা আমাদের জানাও। মূলত তাঁদের গবেষণার প্রতি আগ্রহী করে গড়ে তোলাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। গত বছর ছুটিতে যখন দেশে যাই, সে সময়ই গড়ে তুলি ইউডা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাব।’

উচ্চশিক্ষার জন্য যাঁরা দেশের বাইরে পড়তে যেতে আগ্রহী, তাঁদের জন্য গবেষণার অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। শিক্ষার্থীরা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাবের মাধ্যমে কীভাবে একটি গবেষণাপত্র তৈরি করে, তা জার্নালে প্রকাশ করতে হয়, সে বিষয়ে সম্যক ধারণা পাচ্ছে বলে মনে করেন ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার ইফফাত কায়েস চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুবিধার্থে এই ক্লাবের পক্ষ থেকে ইউডা সেন্টার ফর ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের সমন্বয়ে নামমাত্র ফিতে করানো হচ্ছে আইইএলটিএস, জিআরই, টোয়েফেল কোর্স।’

কথা হয় ফার্মাসি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ক্লাবটির সভাপতি নুসরাত কামালের সঙ্গে। তিনি জানান, ইউডা ফার্মাসি রিসার্চ ক্লাবের বর্তমান সদস্যসংখ্যা এখন ৭৫। প্রতি বৃহস্পতিবার তাঁরা আয়োজন করেন একটি প্রেজেন্টেশনের। যেখানে যুক্ত হন দেশসেরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। বিনিময় করেন তাঁদের কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা। এ ছাড়া অতিথি বক্তাও আনা হয় এই প্রেজেন্টেশনে। হার্ভার্ড, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির মতো বিশ্বখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পোস্ট ডক্টরাল করছেন, এমন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের কেমোথেরাপি নিয়ে নার্সদের ‘নলেজ অ্যান্ড প্র্যাকটিস’ বিষয়ে একটি গবেষণা জরিপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই ক্লাবের কয়েকজন। বর্তমানে এটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি জার্নালে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।