জাবিতে র‍্যাগিং, শিক্ষার্থী অসুস্থ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী। গত সোমবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ বুধবার হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন র‍্যাগিংয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থী।

র‍্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীর নাম মো. ফয়সাল আলম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের (৪৮তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র।

এদিকে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ভীত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার হল ছেড়ে বের হয়ে যান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের সুইমিং পুল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন জায়গায় রাত কাটিয়েছেন তাঁরা। র‍্যাগিংয়ের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় তাঁরা হলে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান।

হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার রাত একটার দিকে দ্বিতীয় বর্ষের ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী হলের গণরুমে যান। এ সময় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা বেছে বেছে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পরিচয় দিতে বলেন। একপর্যায়ে ফয়সালকে পরিচয় দিতে বলেন মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিরাজ হাসান। একবার পরিচয় দেওয়ার পরও আরও কয়েকবার ফয়সালের কাছে পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ফয়সালকে বুক ডন, জানালার গ্রিল ধরে ঝোলার মতো বিভিন্ন কাজ করতে বলেন। এক হাতে ক্ষত থাকায় এসব কাজ করতে অস্বীকৃতি জানান ফয়সাল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফয়সালের কানে দুটি থাপ্পড় দেন মিরাজ। এ কারণে ফয়সালের কান থেকে রক্ত পড়তে শুরু করায় ভোর চারটার দিকে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফয়সালকে আবার হলে নেওয়া হয়।

অসুস্থ অবস্থায়ই পরদিন মঙ্গলবার বিভাগে ক্লাস করতে যান ফয়সাল। ওই সময় আবারও তাঁর কান থেকে রক্ত পড়তে শুরু করলে তাঁকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। র‍্যাগিংয়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মিরাজ হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘র‍্যাগিংয়ের ঘটনা জানার পরপরই সংশ্লিষ্ট হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। যেহেতু হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাই হল প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হল প্রশাসন সহায়তা চাইলে প্রক্টরিয়াল টিম থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো ঘটনা শুনেছি। আজ রাতের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করে প্রক্টর অফিসে পাঠানো হবে। র‍্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।’