ফল প্রকাশের দাবিতে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অবস্থান

বিভিন্ন বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ৩১ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
বিভিন্ন বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ৩১ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বিভাগের অফিস কক্ষের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। শিক্ষকদের আশ্বাসে তাঁরা ফল প্রকাশের অগ্রগতির ব্যাপারে ২৪ ঘণ্টার জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১০টার দিকে ওই বিভাগের সামনে বিভিন্ন বর্ষের ফল প্রকাশের দাবিতে স্লোগান দেন তৃতীয়, চতুর্থ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন।

আন্দোলনরত কয়েক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রথম বর্ষের, ৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় বর্ষের, ১৭ ডিসেম্বর তৃতীয় বর্ষের ও চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা এ বছরের ২৪ জানুয়ারি শেষ হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৭ জুলাই প্রথম বর্ষের ফল প্রকাশ হয়েছে। অন্য কোনো বর্ষের ফল প্রকাশ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, পরীক্ষা শেষের ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা।

আন্দোলনকারী মাস্টার্সের কয়েক শিক্ষার্থী জানান, গত জানুয়ারি মাসে তাদের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রায় সাত মাস হলেও ফল প্রকাশ হয়নি। স্নাতকের ফল না পাওয়ায় তাঁরা চাকরির আবেদন করতে পারছেন না। পরিবারের কাছেও কোনো জবাব দিতে পারছেন না।

কর্মসূচি শুরুর পরপরই বিভাগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন কয়েকবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে তাঁর আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা তখন কর্মসূচি স্থগিত করেননি। এরপর বেলা ১১টার দিকে চারজন সহকারী প্রক্টরসহ প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তাঁরা বিভাগের অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। প্রক্টর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, দুই-একজন শিক্ষক তাদের কোর্সের পরীক্ষার খাতা জমা দিচ্ছেন না। আমি শিক্ষকদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এ নিয়ে শিক্ষকেরা বিভাগে জরুরি বৈঠকে বসেছেন।’

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিভাগের শিক্ষকেরা জরুরি একাডেমিক বৈঠকে বসেন। বেলা দেড়টায় তাঁরা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার দপ্তরে যান। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে তারা সেখান থেকে ফিরে আসেন। সেখানে সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন ফল প্রকাশের বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় চেয়ে নেন। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সকল বর্ষের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।

জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রেজাল্ট হতে দেরি কেবল আমাদের বিভাগে না, আরও অনেক বিভাগ, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন হয়। আমাদের বিভাগে এমন হয় গুটিকয়েক শিক্ষকের কারণে। এবার খাতা জমা না দেওয়া এক শিক্ষককে অফিস থেকে ফোন করা হয়েছিল। তিনি ফোন রিসিভ করেননি, পরে যোগাযোগও করেননি। আমরা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি নিজে ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তাঁর খাতার ব্যাপারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে চেয়েছেন।