এমপিওভুক্ত হচ্ছে ২,৭৪৩ প্রতিষ্ঠান

এমপিওভুক্তির জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ২ হাজার ৭৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিগগির এমপিওভুক্ত হচ্ছে। এর বাইরে অনুদান পেয়ে আসা ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে পুরোপুরিভাবে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেছেন, এমপিওভুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেলে ঈদের আগেই ঘোষণা হতে পারে। আর তা না হলে ঈদের পরে ঘোষণা হবে। লন্ডনে সফররত প্রধানমন্ত্রীর আগামী বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার কথা। তবে যখনই ঘোষণা করা হোক, কার্যকর হবে গত ১ জুলাই থেকে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সোহরাব হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, এমপিওভুক্ত ঘোষণার জন্য তাঁদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। 

এমপিওভুক্ত হলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মাসে মূল বেতন ও কিছু ভাতা পান। বর্তমানে সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ২৮ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন প্রায় ৫ লাখ। স্বীকৃতি পেলেও এমপিওভুক্ত না হওয়া প্রতিষ্ঠান আছে সাড়ে ৫ হাজারের মতো। আর স্বীকৃতি না পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে আরও কয়েক হাজার।

সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছিল। এরপর থেকে এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন চলছে। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর এমপিওভুক্তির জন্য জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা জারি করে আবেদন নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের স্বীকৃতি, শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পরীক্ষায় পাসের হার—এই চার মানদণ্ডের ভিত্তিতে ৯ হাজার ৬১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্তির জন্য চূড়ান্ত হওয়া ২ হাজার ৭৪৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কুল ও কলেজ ১ হাজার ৭৬৩টি। এগুলোকে এমপিওভুক্ত করলে বছরে খরচ হবে প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। ৪৮৬টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও ৫১২টি মাদ্রাসা রয়েছে। এগুলো এমপিওভুক্তিতে বছরে খরচ হবে ৫৪০ কোটি টাকা। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, নীতিমালার চার শর্তে যেসব উপজেলায় কোনো প্রতিষ্ঠান যোগ্য হতে পারেনি এবং হাওর, চরাঞ্চল, পাহাড়ি এলাকা, নারী শিক্ষা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষায় অনগ্রসর এলাকার কিছুসংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে শর্ত শিথিল করে এমপিওভুক্তির তালিকায় রাখা হয়েছে। এমপিও নীতিমালায় এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় শর্ত শিথিলের সুযোগ রয়েছে। 

নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা চান স্বীকৃতি পাওয়া সব কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেই দ্রুত এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়া হোক। প্রয়োজনে এখন আংশিক বেতন দিয়ে শুরু করে তিন বছরে তা পূর্ণ করা হোক। প্রত্যাশা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা না হলে মানবিক আবেদন নিয়ে তাঁরা আবারও রাজপথে নামবেন।

ইবতেদায়ি মাদ্রাসা 

বর্তমানে অনুদান পাওয়া ইবতেদায়ি মাদ্রাসা (প্রাথমিক স্তর) আছে ১ হাজার ৫১৯টি। এসব মাদ্রাসার প্রধানেরা মাসে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং সহকারী শিক্ষকেরা ২ হাজার ৩০০ টাকা অনুদান পান। এসব মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত হচ্ছে। এমপিওভুক্ত হলে এসব মাদ্রাসার শিক্ষকেরা সংযুক্ত ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের সমান বেতন পাবেন। এ জন্য বছরে খরচ হবে ১০৯টি কোটি টাকা।