ছাত্রদলের ওপর হামলাকারীরা 'ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসী': সাদা দল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলাকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরই বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াত সমর্থক সাদা দলের শিক্ষকেরা। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে দল-মতনির্বিশেষে শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলোর নির্বিঘ্নে কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সাদা দলের শিক্ষকেরা এসব দাবি জানান। গতকাল সোমবারের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ‘চিহ্নিত ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তাঁরা।

সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামসহ প্রায় ২০০ শিক্ষকের এই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করছি, জাতীয় রাজনীতিতে যেমন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে, তেমনি আমাদের প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করে একটি কর্তৃত্ববাদী পরিবেশ কায়েম করা হয়েছে। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ নিজেদের একক আধিপত্য বজায় রাখার অশুভ মানসিকতা নিয়ে প্রতিনিয়তই ভিন্নমতের রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর গতকালের হামলা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরই বহিঃপ্রকাশ।’

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না। এমনকি একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একধরনের পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি পরিবেশ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

বিবৃতিতে সাদা দলের শিক্ষকেরা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় গণতন্ত্রের সূতিকাগার, মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও লালনের কেন্দ্র। এখানে ছাত্র-শিক্ষকসহ সব ছাত্রসংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করবে, কার্যক্রম পরিচালনা করবে—এটিই প্রত্যাশিত।

গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতা-কর্মী ও তিনজন সাংবাদিককে মারধর করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ঘটনাটির জন্য পরে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয়, কারও ওপর হামলার কোনো নির্দেশনা দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। অতি উৎসাহী কিছু নেতা-কর্মী হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন।