গল্পের খোঁজে একদল তরুণ

বিইউপি ফিল্ম ফেস্টে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত
বিইউপি ফিল্ম ফেস্টে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত

‘প্রতিদিন ক্যামেরাবন্দী হচ্ছে কতশত জীবনের গল্প। কিন্তু সব গল্পই কি সেলুলয়েডে প্রাণ পায়? কিছু গল্প হারিয়ে যায়, ফুরিয়ে যায় কিংবা অজানাই থেকে যায়। সেই সব গল্পের খোঁজেই আমাদের পথচলা,’—বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ফিল্ম ক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসানের কথাটা বেশ ভালো লাগল।

নিজেদের চিন্তা-ভাবনার একটা প্রতিফলন পর্দায় তুলে ধরতেই এক হয়েছেন একদল তরুণ-তরুণী, কাজ করছেন বিইউপি ফিল্ম ক্লাবে। বিইউপির আইন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান। বর্তমানে ক্লাবটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, ‘এ বছরের এপ্রিল মাসে যাত্রা শুরু করে আমাদের ফিল্ম ক্লাব। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমরা সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি। মজার আমরা যখন শুরুর দিকে ক্লাবের চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলাম, তখন অনেকের কাছে এটা একরকম ঘোরের মতো ছিল।’ জাহিদ জানালেন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি তাঁরা কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজনও করেছিলেন। শুরুতে একটা চলচ্চিত্র দেখানো হয়েছে। তারপর সেই চলচ্চিত্রের ওপর করা হয়েছে নানা প্রশ্ন। উত্তর দিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা। বিজয়ীদের জন্য পুরস্কারটিও ছিল চমকপ্রদ—সিনেমার টিকিট!
সাধারণের কাছে হয়তো এই পুরস্কার আহামরি কিছু নয়, কিন্তু যাঁরা সিনেমা ভালোবাসেন, তাঁদের কাছে এই উপহার নিশ্চয়ই আকর্ষণীয়। তাই কুইজে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন তুমুল আগ্রহ নিয়ে। বিজয়ী নির্ধারণ করতে গিয়ে কখনো কখনো যে বিপাকে পড়তে হয়, সে গল্পও শোনালেন জাহিদ—‘একবার দুজন সমানসংখ্যক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছিলেন। কেউ কারও চেয়ে কম যান না। একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।’

চলচ্চিত্র ভালোবাসেন যাঁরা, এমন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা বসেছিল গত ২৩ ও ২৪ সেপ্টেম্বর বিইউপিতে। আর এই মিলনমেলার আয়োজন করেছিল বিইউপি ফিল্ম ক্লাব। বিইউপি ক্যাম্পাসে এই প্রথম আয়োজন করা হয় ‘বিইউপি ফিল্ম ফেস্ট-২০১৯’। যেখানে ২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। উৎসবে দেখানো হয় তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ফাগুন হাওয়ায় এবং পিপলু আর খান পরিচালিত হাসিনা: আ ডটার’স টেল চলচ্চিত্র দুটি। চলচ্চিত্রবিষয়ক নানা প্রশ্নের উত্তর ও দিকনির্দেশনা দেন পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী ও চিত্রগ্রাহক পঙ্কজ পালিত।

কথা হলো বিইউপি ফিল্ম ক্লাবের সদস্য মুনিফ হোসাইনের সঙ্গে। মুনিফ বলেন, ‘সিনেমার পোস্টার তৈরি, সিনে কুইজ, সিনে ডিবেট, কসপ্লে—এসবের ওপর আয়োজিত হয়েছিল অলিম্পিয়াড। সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল সিনে ডিবেট। চলচ্চিত্রে সেরা জুটি কে, এই নিয়ে জমে ওঠে বিতর্ক। দুই পক্ষের তার্কিকেরাই জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেছেন।’

ফিল্ম ফেস্টে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে নির্বাচিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম এনশিয়েন্ট ট্রিজ। এ ছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান লাভ করে যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঘনা-উইদাউট মানি ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন চলচ্চিত্রটি।

ছোট ছোট আয়োজন সফল করার মধ্য দিয়ে ক্লাবের সদস্যরা স্বপ্ন দেখেন, বিইউপি ফিল্ম ক্লাব হবে ক্যাম্পাসের সেরা ক্লাব। ১০০ জন সিনেমাপ্রেমী সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে চলছে সংগঠনটির যাত্রা।