'রকিং মালিহা'

মালিহা তাবাসসুম
মালিহা তাবাসসুম

এই তো কিছুদিন আগের কথা। ব্যাচ ট্যুরে মালিহা তাবাসসুমকে শিক্ষক আর শিক্ষার্থীদের সম্মতিক্রমে ‘মোস্ট ক্রিয়েটিভ স্টুডেন্ট অব দ্য ব্যাচ’ উপাধি দেওয়া হলো। না দিয়ে আর উপায় কী। ফেসবুকে তাঁর সংক্ষিপ্ত পরিচিতির জায়গায় লেখা আছে—‘পেশায় ডাক্তার, গানের সঙ্গে প্রেম, লেখার প্রতি মোহাবিষ্ট, আবৃতির জন্য ব্যাকুলতা আর শখের বশে বাচিক শিল্পী।’

মালিহা তাবাসসুম ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। ছোটবেলা থেকেই নাকি তাঁর নামের আগের ডাক্তার শব্দটা খুবই ‘গর্জিয়াস’ লাগত। আবার লেখালেখি, গান, আবৃত্তিসহ সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডও খুব টানত। এ বছর বইমেলায় মালিহার প্রথম ক্রাইম থ্রিলার বেরিয়েছে। নাম—বৃত্তবন্দী। সহপাঠীরা তাঁর লেখা পড়ে প্রশংসা তো করেছেনই, ফেসবুকের ইনবক্সে কত ‘চিঠি’ যে এসেছে, তার ইয়ত্তা নেই। মালিহা তাই ঠিক করেছেন, এবার থেকে প্রতিবছর একটা করে বই বের করবেন।

মালিহা তাবাসসুম বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী। বেসরকারি একটা রেডিওতে অনুষ্ঠানও করেন। আর একটা বেসরকারি টিভি চ্যানেলে বাচিক শিল্পী হিসেবে কাজ করেন। কলেজ ক্যাম্পাসে ‘ডি বিটস’ নামের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। যেকোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে তো তিনি আছেনই। মডেলিংটাই–বা বাদ যাবে কেন। হ্যাঁ, সেটিও করেন। ই-মেইল ঠিকানায় তাঁর নাম ‘রকিং মালিহা’। প্রতিটি শিক্ষকই কমবেশি তাঁকে উৎসাহ দেন। তবে আলাদা করে বললেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সেলিম রেজার নাম। সবার তাঁকে নিয়ে কী গর্ব! এটা–ই তো তিনি চান।

একসঙ্গে তাই সবই চালাচ্ছেন। সমানতালে। মালিহার ভাষায়, ‘আমার অনেক উদ্যম। আমি সব করতে চাই। ভালোভাবে। আর এটা তো ওড়ারই বয়স। এখন যদি না করি, তো আর কবে। মা বলেন, “তুমি না পারলে আর কে পারবে। কেউ যদি পারে, তো সেই মানুষটা তুমি”। তবে এত কিছু করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ি কি না, মা কখনো কখনো এই ভয়ও পান।’

ভালো চিকিৎসক হওয়ার উদ্দেশ্যে মালিহা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে চান। গবেষণা করতে চান। বাংলাদেশের থ্রিলারকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করাতে চান। হতে চান একজন আগাথা ক্রিস্টি বা জে কে রাওলিং। বাংলাদেশের নারীদের স্বাবলম্বী করতে অবদান রাখতে চান। আর চান—তাঁর গল্প নিয়ে একদিন সিনেমা হোক। সেই সিনেমায় তিনি প্লেব্যাক করবেন। অভিনয়ের দায়িত্বটাও হয়তো তিনিই নেবেন!