জাবির হলগুলো খুলেছে, ফিরছেন শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

একমাস বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার খুলেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়েছে।

বন্ধ থাকার কারণে যেসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছিলেন, এর মধ্যে তাঁরা হলে ফিরেছেন। দূর-দূরান্ত থেকেও ফিরতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, ‘সব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টা থেকে নিজ নিজ হলে ফিরতে শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় প্রতিটি হলে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আগামী রোববার থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চলবে। আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ স্বাভাবিক থাকবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে উপাচার্যের ‘মধ্যস্থতায়’ ছাত্রলীগকে বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগের তদন্তের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। ২৩ আগস্ট শুরু হওয়া এ আন্দোলন ১৮ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের পদত্যাগ দাবির আন্দোলনে রূপ নেয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় ২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন মোড় নেয় উপাচার্যের অপসারণ দাবির আন্দোলনে। ১০ দিন উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ রাখার পর ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। পরের দিন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের পিটিয়ে সরিয়ে দেন। ওই দিনই জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম চালু করার দাবিতে ২০, ২৬ ও ২৮ নভেম্বর উপাচার্য বরাবর তিন দফায় আবেদন জানান একদল শিক্ষার্থী। এর আগে গত ১৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর’ হল খুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সচল করার দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ হল খোলাসহ অন্যান্য দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।

গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় আজ সকাল ১০টা থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও রোববার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিন্ডিকেট থেকে হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা। মওলানা ভাসানী হলের স্নাতকোত্তর শ্রেণির আবাসিক শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান, ‘হঠাৎ হল ছাড়ার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছিলাম। তবে আবার হলে আসতে পেরে ভালো লাগছে।’