উপাচার্যের দরজায় আবার ব্যানার

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষকদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। গতকাল দুপুরে।  ছবি: প্রথম আলো
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষকদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। গতকাল দুপুরে। ছবি: প্রথম আলো

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং তাঁর সাক্ষাৎ পাওয়ার দাবিতে তাঁর বন্ধ কক্ষের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকেরা। তাঁদের কর্মসূচির ব্যানার দরজায় এবং ইতিপূর্বে সরিয়ে ফেলা ২১ দফা দাবিসংবলিত ব্যানারটি আবার দরজার পাশে সেঁটে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের উপস্থিতি–অনুপস্থিতি নিয়ে ক্যাম্পাসের রাসেল চত্বরে একটি হাজিরা খাতা টানিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের সংগঠন ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’। গতকাল মঙ্গলবার খাতায় হাজিরার তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি। খাতা অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ১৪ জুন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ৯৯০ দিনে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২২৭ দিন। অনুপস্থিত ছিলেন ৭৬৩ দিন। 

গতকাল বেলা একটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত অধিকার সুরক্ষা পরিষদের ব্যানারে শিক্ষকেরা ওই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে পরিষদের আহ্বায়ক ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদসহ প্রায় ২০ জন শিক্ষক অংশ নেন।

কর্মসূচি পালনকালে অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে উপাচার্যকে অনেক দিন না পেয়ে তাঁর কার্যালয়ের দরজায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি সেঁটে দেওয়া ডিজিটাল ব্যানার খুলে ফেলার প্রতিবাদ এবং পুনরায় সেটি টানানোর দাবিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সেই ব্যানার প্রক্টরের কার্যালয় থেকে উদ্ধার করে পুনরায় উপাচার্যের দরজায় টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

সহযোগী অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দোতলায় উপাচার্যের কার্যালয়। ক্যাম্পাসে উপাচার্যের দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগ ও নানা দাবিতে শিক্ষকদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাফেটেরিয়ায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে জানানো হয়েছিল, উপাচার্যের কাছে বিভিন্ন দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া হবে। কিন্তু উপাচার্য অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষকনেতারা তাঁর কক্ষের দরজায় ২১ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি (ডিজিটাল ব্যানারে) সেঁটে দেন। পরে তা খুলে ফেলায় আবার নতুন করে সেটি সাঁটানো হয়েছে। 

২১ দফার উল্লেখযোগ্য দাবি হলো, আচার্য কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী উপাচার্যকে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে। ভর্তি জালিয়াতির প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে হবে এবং অপরাধী ব্যক্তির শাস্তি দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, নিয়োগ বোর্ডের সভাসহ সব সভা ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে না করে ক্যাম্পাসে করতে হবে।

গতকাল বিকেলে উপাচার্যের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে উপাচার্যের একান্ত সচিব আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি বিভাগের  কাজে স্যার ঢাকায় রয়েছেন।’ ক্যাম্পাসে দিনের পর দিন উপস্থিত না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করি, ঠিক হয়ে যাবে।’ 

প্রক্টর আতিউর রহমান বলেন, ‘দরজায় সাঁটানো ব্যানারটি খুলে ফেলা হয়েছিল এ জন্য যে দরজা খুলতে হয়েছিল।’