প্রস্তুতি চালিয়ে যেয়ো

যেই অধ্যায়ে দুর্বলতা আছে, সেগুলো পড়তে হবে বারবার
যেই অধ্যায়ে দুর্বলতা আছে, সেগুলো পড়তে হবে বারবার

পরীক্ষার আগেই এক কঠিন পরীক্ষায় পড়ে গেছে এ বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। করোনাভাইরাস নিয়ে সবাই যখন আতঙ্কিত, চিন্তিত, কলেজপড়ুয়া এই ছেলেমেয়েগুলোর দুশ্চিন্তা আরও বেশি। একটা অনিশ্চিত অপেক্ষার মধ্যে পড়ে গেছে ওরা।

তবু প্রিয় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বলব, তোমরা ধৈর্য ধরো। মানুষের জীবন তো সব সময় সরলরৈখিক হয় না। বাধা, প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই পথ চলতে হয়। এই অনিশ্চিত সময়টাই হয়তো সামনের দিনগুলোর জন্য তোমাকে আরও শক্ত, আরও সাহসী, আরও অভিজ্ঞ করবে।

আশা করছি, এখন তোমরা ঘরেই আছ। কেননা সেটাই তোমাদের করার কথা। কলেজ-কোচিংয়ের ছোটাছুটি যেহেতু নেই, প্রায় পুরো ২৪ ঘণ্টা সময়ই এখন তোমার হাতে। দুশ্চিন্তা না করে কীভাবে তোমরা সময়টা কাজে লাগাতে পারো, সেটাই বলি।

১. প্রতিটি বই অধ্যায়ভিত্তিক ভাগ করে নিয়ে নতুন করে রিভিশন দিতে পারো। একটা দাগ টানলে দাগটা যতটা গাঢ় হয়, যদি তার ওপর আরেকটা দাগ টানা হয়, তাহলে সেই দাগ আরও বেশি গাঢ় হবে। লেখাপড়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি এমন, এ কথা মনে রেখো।

২. যাদের কিছু কিছু অধ্যায়ে দুর্বলতা ছিল, তাদের একটা সুযোগ হলো। সেই অধ্যায়গুলো বারবার পড়ে এমনভাবে আত্মস্থ করে ফেলতে পারো, যেন মনে হয়, সেগুলোই তোমার কাছে সবচেয়ে সহজ।

৩. শরীরটা যেন ভালো থাকে, সেদিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে। অসতর্ক হলে কোভিড-১৯ কেন, যেকোনো অসুখ তোমাকে কাবু করতে পারে।

৪. প্রস্তুতি নিতে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়লে মুঠোফোনের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারো। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে পারো। কিন্তু কোনোভাবেই বাসা থেকে বেরোবে না। শিক্ষক বা বন্ধুর সঙ্গে কথা বললে হয়তো কিছুটা সাহস পাবে।

৫. অন্যান্য বছরের তুলনায় পরীক্ষার প্রস্তুতিতে তুমি একটু বেশি সময় পেলে, এটাকে ইতিবাচকভাবে দেখে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারো।

৬. কারও যদি ব্যবহারিক খাতার কাজ বাকি থাকে, এই সময়ে কাজ শেষ করে ফেলতে পারো।

৭. বহুনির্বাচনী প্রশ্নগুলোর দিকে বিশেষ নজর দেবে। যে বিষয়ে তোমার বেশি ভুল হয়, সেদিকে জোর দাও।

৮. নির্দিষ্ট সময় ধরে টেস্ট পেপারের বিভিন্ন প্রশ্নের ওপর ঘরে বসে নিজেই নিজের পরীক্ষা নাও। নিয়মিত পরীক্ষা দিতে থাকলে তোমার পরীক্ষাভীতি একদম দূর হয়ে যাবে।

৯. পত্রিকার পড়াশোনা পাতায় চোখ রাখতে পারো। বিভিন্ন প্রশ্ন, পরামর্শ তোমার কাজে আসবে।

১০. যাদের হাতের লেখা ভালো না, এই ফাঁকে বেশি বেশি হাতের লেখার চর্চা করতে পারো। লিখে লিখে পড়ো, তাহলে জড়তা দূর হয়ে যাবে।

তোমাদের জন্য অনেক ভালোবাসা ও শুভকামনা।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক (বাংলা), রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ