এসএসসির ফল তো হলো, এবার একাদশে ভর্তির কী হবে

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলেও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। আর ভর্তি পিছিয়ে যাওয়ায় আগামী ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরুর কোনোই সম্ভাবনা নেই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তবে ভর্তিসংক্রান্ত প্রাথমিক কাজগুলো ঠিক করে রেখেছে ঢাকা বোর্ড। এবারও ঢাকা বোর্ডের অধীনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় ভর্তির কাজটি হবে।

গত রোববার এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন পরীক্ষার্থী।

ঢাকা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিসংক্রান্ত কাজগুলো ঠিক করে রেখেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল গত মাসের শুরুর দিকে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করে ১০ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া শুরু হবে। ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পুরো শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে গেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, এসএসসির ফল তৈরির কাজে শিক্ষার্থীদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই। কিন্তু ভর্তির কাজে শিক্ষার্থীদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। অনলাইনে আবেদনের কাজটি হলেও বেশির ভাগ শিক্ষার্থী দোকানে গিয়ে আবেদন করে থাকে। এ ছাড়া প্রতিদিনই এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে অনেক শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বোর্ডেও যেতে হয়। এ অবস্থায় ভর্তির কাজটি শুরু করতে চাচ্ছেন না তাঁরা। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় ১৫ জুনের পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

>

১৫ জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ভর্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এবার আবেদন হবে শুধু অনলাইনে। এসএমএসে আবেদন করা যাবে না। 

অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, যদি আগস্টেও ক্লাস শুরু করা যায় তাতেও একাদশ শ্রেণির ক্লাস নিয়ে বড় ধরনের সমস্যা হবে না। কারণ, আগের ঘোষণা অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি আছে। ফলে জুলাইয়ে খুব বেশি ক্লাস নেই। 

ভর্তির নিয়ম–কানুন চূড়ান্ত

ঢাকা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার শুধুই অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে। এসএমএসে আবেদন করা যাবে না। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে কমপক্ষে ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে। আগের মতো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে একজন শিক্ষার্থী কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য মনোনীত হলো, তা ঠিক করা হবে।

এবার ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার কোটা ছাড়া অন্য কোটা থাকছে না। তবে প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির শিক্ষার্থী, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অসামান্য সাফল্যের (পুরস্কারপ্রাপ্ত) অধিকারী শিক্ষার্থী এবং প্রবাসীর সন্তানদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ সুবিধা পেতে তাদের সনাতন (ম্যানুয়ালি) পদ্ধতিতে সরাসরি শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করতে হবে। কলেজে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা এবং আবেদনকারীর অন্যান্য বিষয় যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে। 

ভেবে–চিন্তে কলেজ পছন্দ দেওয়ার পরামর্শ

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. হারুন-আর-রশিদ প্রথম আলোকে, উচ্চমাধ্যমিক মোট আসন নিয়ে সমস্যা নেই। এবার পাস করেছে প্রায় ১৭ লাখ পরীক্ষার্থী। আরা সারা দেশে ভর্তির জন্য আসন আছে প্রায় ২৯ লাখ।

তবে শিক্ষা বোর্ডের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, সমস্যা হলো, ভালো কলেজগুলোতে আসন কম। এ কারণে অতীতে দেখা গেছে, অনেকেই শুধু ভালো কলেজগুলোতে ভর্তির পছন্দ দেয়। কিন্তু এসএসসির ফল ও আসনের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় অনেকেই ভর্তি নিয়ে জটিলতায় পড়ে। এ জন্য কলেজ পছন্দের ক্ষেত্রে নিজের এসএসসি ও সমমানের ফল ও কলেজের আসন দেখে পছন্দক্রম দেওয়ার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।