অনলাইন কার্যক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে শাহীন শিক্ষা পরিবার

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের শাহীন শিক্ষা পরিবার। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ৩২টি জেলার ১০৭টি ক্যাম্পাসের প্রায় ১ লাখ শিক্ষার্থীকে অনলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। ফেসবুকের বিভিন্ন মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে সহজে যোগাযোগ রাখা, বিষয়ভিত্তিক ক্লাসের ভিডিও, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

শাহীন শিক্ষা পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিদিনের পড়ার তালিকা অনুযায়ী শ্রেণিভিত্তিক ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও বাংলা বিষয়ের ভিডিও ক্লাসগুলো প্রতিদিন সকাল নয়টায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি করা মেসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করা হয়। এ প্রক্রিয়াতে এখনো শিক্ষা কার্যক্রম চলমান। একজন শিক্ষার্থী প্রয়োজনে ভিডিও ক্লাসগুলো বারবার দেখার সুযোগ পাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, প্রতিদিনের বাড়ির কাজের জন্য পড়ার চার্ট ও ভিডিও ক্লাসগুলোতে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও যেকোনো প্রয়োজনে শ্রেণি পরিচালক ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকেরা বিভিন্ন মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়েও কাজ করার কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিভিন্ন অনলাইন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে তাদের উপযোগী কনটেন্ট দেওয়া হচ্ছে।

শাহীন শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাছুদুল আমীন বলেন, জাতীয় পর্যায়ে চারবার প্রথম স্থান অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দেশের উপযোগী ও সহজ অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পদ্ধতি তৈরি করা হয়। ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে ১০৭টি ক্যাম্পাসের শাখাপ্রধানদের যুক্ত করে মেসেঞ্জার গ্রুপ খোলা হয়। শিক্ষকদের নিয়ে তিনটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিগুলো প্রতি মাসের পড়াশোনার তালিকা তৈরি, প্রতিটি শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ভিডিও কনটেন্ট তৈরি এবং অনলাইন ক্লাসের বাস্তবায়ন ও তদারকি করে থাকে। শাখাপ্রধানেরা নিজ নিজ শাখার অভিভাবকদের নিয়ে প্রতিটি শ্রেণির জন্য আলাদা আলাদা মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে যোগাযোগ রাখেন।

মাছুদুল আমীন আরও বলেন, তাঁদের মূল উদ্দেশ্য সব শিক্ষার্থী যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করা। পরীক্ষার দিন সকালে গ্রুপে প্রশ্নপত্র পোস্ট করা হয়। শাখা ক্যাম্পাসের অফিস থেকে প্রশ্নপত্র (হার্ড কপি) ও পরীক্ষার খাতা সরবরাহ করা হয়। অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে নিজ নিজ বাসায় পরীক্ষা দিয়ে উত্তরপত্রের ছবি তুলে তা শ্রেণি পরিচালকের ব্যক্তিগত মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে শ্রেণি পরিচালক খাতা মূল্যায়ন করে নম্বরপত্র তৈরি করেন। পরে তা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি মেসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করেন। এতে অভিভাবকেরা সন্তানদের এক সপ্তাহের ফলাফল দেখতে পান।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বলেন, মহামারি কেটে গেলেও ভার্চ্যুয়াল ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থী স্কুলে ক্লাস করে যাওয়ার পরও সেটি মেসেঞ্জার গ্রুপে পাবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ২০২১ সালের জন্য পড়ার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। সরকার যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করার ব্যাপারে ইতিবাচক হয়, সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এ পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মানাটাই বড় বিষয়। স্কুলে যাতে গাদাগাদি করে বসতে না হয়, সে ক্ষেত্রে দুটি শিফটে স্কুল চলবে। একেক শিফটে সপ্তাহে তিন দিন জোড় ক্লাস এবং সপ্তাহের অন্য তিন দিন বিজোড় ক্লাসগুলো বসানো হবে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠান মিলে এ ধরনের সমস্যা সমাধান করা যাবে।

শাহীন শিক্ষা পরিবারের মতো প্রাইভেট বা ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাজারো মানুষের জীবন যুক্ত থাকায় সরকারের কাছে বাড়িভাড়া সহনশীল করাসহ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখার প্রত্যাশার কথা বলেন শাহীন শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান মাছুদুল আমীন।