কম্পিউটার শিক্ষা

প্রশ্নোত্তর
প্রিয় শিক্ষার্থী, কম্পিউটার শিক্ষা ১ম পত্র থেকে একটি প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।

প্রশ্ন: ফাইবার অপটিক্যাল কেব্ল কী? ফাইবার অপটিক্যাল কেবেলর বর্ণনা দাও।
উত্তর: ডেটা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে কেব্ল (তার) একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আর বহুল ব্যবহূত কেবেলর মধ্যে ফাইবার অপটিক্যাল কেব্ল অন্যতম প্রধান। এই কেব্ল অত্যন্ত দ্রুত ডেটা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহূত হয়।
ফাইবার অপটিক্যাল কেবল:
ফাইবার অপটিক্যাল হলো ডাই-ইলেকট্রনিক অন্তরক পদার্থ দিয়ে তৈরি একধরনের আঁশ। যা আলো নিবন্ধীকরণ ও পরিবহনে সক্ষম।
এ কেবেলর বিশেষত্ব হলো, এটি ইলেকট্রনিক্যাল সিগন্যালের পরিবর্তে আলোক বা লাইট সিগন্যাল ট্রান্সমিট করে।
আর এ কাজে ব্যবহূত হয় ফাইবারের অভ্যন্তরে গ্লাস বা প্লাস্টিক কোর। এ কেবেলর মাধ্যমে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য লেজার রশ্মি ব্যবহার করা হয়।
সাধারণত ফাইবার অপটিক্যাল তিনটি অংশের সমন্বয়ে গঠিত। যথা—
ক) কোর: ভেতরের ডাই ইলেকট্রনিক কোর যার ব্যাস ৮ থেকে ১০০ মাইক্রোন হয়ে থাকে।
খ) ক্ল্যাডিং: কোরকে আবদ্ধ করে থাকা বাইরের ডাই-ইলেকট্রিক আবরণ ক্ল্যাডিং নামে পরিচিত।
গ) জ্যাকেট: আবরণ হিসেবে কাজ করে।
ফাইবার অপটিক্যালের বৈশিষ্ট্য:
ক) এটি ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের পরিবর্তে আলোক বা লাইট সিগন্যাল ট্রান্সমিট করে।
খ) এতে আলোকের পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন পদ্ধতিতে ডেটা উৎস থেকে গন্তব্যে গমন করে।
গ) এতে গিগাবাইট রেঞ্জ বা তার চেয়ে বেশি গতিতে ডেটা চলাচল করতে পারে।
ঘ) নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন হিসেবে ফাইবার অপটিক্যাল কেব্ল অধিক ব্যবহূত।
ফাইবার অপটিক্যাল কেবেলর গঠন উপাদান: ফাইবার অপটিক্যাল কেবেলর অন্তরক পদার্থ হিসেবে সিলিকা ও মাল্টিকম্পোনেন্ট কাচ দিয়ে ব্যবহার করা হয়। এসব অন্তরক পদার্থের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো-
ক) শক্তির অপচয় কম হয় খ) রাসায়নিক নিষ্ক্রিয়তা
গ) সহজ প্রক্রিয়াকরণ যোগ্যতা
ঘ) ডেটা দ্রুত আদান-প্রদানে সক্ষম
ফাইবার অপটিক্যাল কেবেলর সুবিধা: ফাইবার অপটিক্যাল কেবেলর বহুবিধ সুবিধা রয়েছে। নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু সুবিধা উল্লেখ করা হলো— ক) ডেটা স্থানান্তরে গতি খুব বেশি
খ) শক্তির ক্ষয় তুলনামূলক কম
গ) নির্ভুলভাবে ডেটা স্থানান্তর
ঘ) ডেটা প্রদানের ক্ষেত্রে পরিবেশের তাপ, চাপ ইত্যাদি বাধা প্রদান করতে পারে না
ঙ) বিদ্যুৎ চৌম্বক প্রভাবমুক্ত
চ) এটি আকারে ছোট ও ওজন কম
ছ) এটির আয়তন কম
জ) ডেটা সংরক্ষণে নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা ইত্যাদি
ফাইবার অপটিক্যাল কেবেলর অসুবিধা: এ কেবেল কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন—
ক) এ কেব্ল অত্যন্ত দামি
খ) কেব্ল ইনস্টল করা তুলনামূলকভাবে ঝামেলাপূর্ণ
গ) এটাকে ইংরেজি ইউ আকারে বাঁকানো যায় না, তাই যেখানে বাঁকানো প্রয়োজন হয় না সেখানে অপটিক্যাল কেব্ল ব্যবহার করা সম্ভব।
ঘ) অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন হয়।
ফাইবারের প্রকারভেদ: ফাইবারের গাঠনিক উপাদানের প্রতিসরাংকের ওপর ভিত্তি করে ফাইবারকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়।
১। স্টেট ইনডেক্স ফাইবার ২। গ্রেডেড ইনডেক্স ফাইবার
৩। মনোমোড ফাইবার
ডেটা কমিউনিকেশনে ফাইবার অপটিক্যাল কেব্ল একটি উন্নত ব্যবস্থা, যা আলোর গতিতে ডেটা প্রেরণ করে। তাই আজকাল বিপুল পরিমাণ ডেটা পরিবহনে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে আন্ত মহাদেশীয় ফাইবার অপটিক্যাল স্থাপিত হয়েছে।
প্রভাষক, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ