মীর যখন ঢাকায়

ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মীর। ছবি: সুমন ইউসুফ
ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মীর। ছবি: সুমন ইউসুফ

২৬ জুন, পড়ন্ত বিকেল। রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে টিভি কমেডি শো মীরাক্কেলের মীরের সঙ্গে মুখোমুখি কথা হলো। মঞ্চে মীরের ছবি, হাতে একটি স্লেট। স্লেটে চক দিয়ে লেখা—‘বলতে শিখুন মীরের মতো।’
মীরের পুরো নাম মীর আফসার আলী। কথা বলেন খুব মজা করে। দর্শকদের মাতিয়ে রাখার গুণটা তাঁর দারুণ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মীর মঞ্চে এলে চিৎকার আর হর্ষধ্বনিতে তাঁকে বরণ করে নিলেন শিক্ষার্থীরা। শুরুতেই মীর বললেন, বাংলাদেশের মানুষ তাঁর খুবই প্রিয়। বক্তব্যের অনেকটা জুড়েই থাকল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, পাবলিক রিলেশন, মিডিয়া অ্যান্ড ম্যাস কমিউনিকেশনের মতো বিষয়। বাদ গেল না মীরাক্কেল প্রসঙ্গও। কথার মধ্যে এমন রস মেশালেন মাঝে মাঝে, না হেসে থাকা গেল না। একপর্যায়ে, মঞ্চ ছেড়ে দর্শকসারিতে মিশে গিয়ে, শিক্ষার্থীদের থেকে আগেই সংগ্রহ করে রাখা প্রশ্নগুলো একে একে পড়লেন এবং উত্তর দিতে থাকলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউল্যাবের একজন শিক্ষার্থী জানতে চেয়েছেন তোতলামি থেকে মুক্তির উপায়। মীর জানালেন, কথা বলার সময় নার্ভাস হওয়া যাবে না, বলতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে। বলিউড তারকা হৃতিক রোশনও একটা সময় তোতলাতেন, এটা কোনো ব্যাপার না। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির তামান্না হক জানালেন, ‘আমি মনে করি আমি পারব, কিন্তু কখনো সাহস করে বক্তৃতা দিতে মঞ্চে ওঠা হয় না। এ থেকে মুক্তির উপায় কী?’ মীর বললেন, ‘সমস্যাটা হচ্ছে, আত্মবিশ্বাসের কমতি। এটি অর্জন করতে হবে। মঞ্চে উঠে বারবার চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টা না করলে কোনো দিনই কিছু হবে না।’
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মীরের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় প্রশ্ন করলাম, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে আপনার ধারণা কেমন? এখানে এসে কেমন সাড়া পেলেন? মীর অকপটে বললেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা যে নিজেদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে এতটা সচেতন, এই ব্যাপারটা সচক্ষে দেখতে পারাটা আমার জন্য একটা বিরাট বড় উপলব্ধি। আমরা যখন ছাত্রাবস্থায় কাজ করেছি, তখন আমরা যতটা না ওয়াকিবহাল ছিলাম কোনো একটা বিষয় নিয়ে, তার থেকে হাজার-লাখ গুণ বেশি ওয়াকিবহাল তাঁরা। এই ব্যাপারটা আমাকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করেছে। সুতরাং, আমি বলব ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এবং জনসংযোগের মতো বিষয়ে কথা বলতে এসে এখানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের থেকে ভালোই সাড়া পেয়েছি, যেটা আমাদের তাঁদের সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করবে।’
এরপর যাওয়ার পালা। শিক্ষার্থীরা চাইলে অবশ্যই আবার বাংলাদেশে আসবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে মীর বিদায় নিলেন।