দেখা জানা আর শেখা

ব্যবহারিক সার্ভেয়িং কোর্সে বুয়েটের কয়েকজন শিক্ষার্থী
ব্যবহারিক সার্ভেয়িং কোর্সে বুয়েটের কয়েকজন শিক্ষার্থী

যন্ত্রটির দিকে সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে। একজনের পর একজন। মাইল খানেক দূরের জিনিসও এত পরিষ্কার দেখা যায়! বিস্ময়ের শেষ নেই এই শিক্ষার্থীদের। সঙ্গে যেকোনো দিকে ঘুরালে আনুভূমিক বা উলম্বভাবে কত ডিগ্রি কোণে ঘুরে যাচ্ছে, তা-ও সঙ্গে লাগোয়া ছোট স্ক্রিনে ভেসে উঠছে। সেটাও কিনা অতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। হ্যাঁ! এটা সাধারণ কোনো দুরবিন নয়। বলছিলাম পুরকৌশলীদের নিত্যব্যবহার্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ ‘থিওডোলাইট’-এর কথা।
প্রতিটি যন্ত্র দেখার পরেই শিক্ষার্থীদের বিস্ময়ের শেষ ছিল না। এত দিনে বইয়ের পাতায় শেখা জিনিসগুলো বাস্তবে যে আসলেই অনেক আকর্ষণীয়, সেটা দেখেই যেন মুগ্ধ হচ্ছিলেন সব শিক্ষার্থী। কর্মক্ষেত্রে যেসব যন্ত্রের ব্যবহার হয়, সেগুলো দেখার সুযোগ মেলে স্নাতক পর্যায়ে ব্যবহারিক সার্ভেয়িং কোর্সে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০১১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো কোর্সটি। না, বিশেষ কোনো ল্যাবরেটরিতে নয়, স্থান ছিল বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠ। কোর্সটি পুরকৌশল বিভাগ তথা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য।
ব্যবহারিক কোর্সের কথা শুনলেই প্রতিটি প্রকৌশল শিক্ষার্থীর মনে যে চিত্র ফুটে ওঠে, সার্ভেয়িং তা থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী একটি কোর্স। তত্ত্বীয় জ্ঞান থেকে ব্যবহারিক জ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালো লাগা যে কত প্রবল, তা এই কোর্স যেন নতুন করে জানান দেয়।
ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা তীব্র খাটুনির এই ব্যবহারিক ক্লাসে কারও যেন এতটুকু ক্লান্তি নেই। শেখার ফাঁকে বন্ধুদের মধ্যে লেগে থাকা ছোটখাটো খুনসুটি, আড্ডা, এক তাঁবুর তলে বসে খাওয়াদাওয়া, হিসাব-নিকাশ—সবকিছুতেই যেন এক অপরূপ প্রাণোচ্ছ্বাস। আনন্দদায়ক এই শিক্ষা গ্রহণে বন্ধুত্বকে শাণিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব কমিয়ে আনতে পারাটাও অনেকের কাছেই তাই বড় অর্জন।