চবির আবাসিক হল আনুষ্ঠানিকভাবে খুলল

হলের শিক্ষার্থীদের ফুল, মাস্ক ও জীবাণুনাশক দিয়ে বরণ করে নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার। আবদুর রব হল, ১৮ অক্টোবর
ছবি: সংগৃহীত

করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়া সাপেক্ষে আজ সোমবার থেকে হলে উঠছেন। তবে প্রথম দিন ছাত্রীদের হলে তেমন ভিড় দেখা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪টি আবাসিক হল রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রদের জন্য নয়টি, ছাত্রীদের পাঁচটি। এসব হলে আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৫৫০। গত ১৭ মার্চ থেকে কাগজে-কলমে ছাত্রদের হল বন্ধ ছিল। কিন্তু অন্তত পাঁচটি হলে শুরু থেকেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর থেকেছেন। দিনে দিনে নেতা-কর্মীদের সংখ্যা শুধুই বেড়েছে। তাঁরা শুধু ছিলেনই না, দফায় দফায় জড়িয়েছেন সংঘর্ষে। বাধা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান নির্মাণকাজে। সর্বশেষ গতকাল রোববার ক্যাম্পাসে মারামারিতে জড়ান নেতা-কর্মীরা।
অবশ্য ছাত্রীদের হলে কেউ ছিলেন না। ফলে হল খোলা নিয়ে ছাত্রীরা বেশ উচ্ছ্বসিত।

গৌরী রায়ের বাড়ি নীলফামারী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। গত সেপ্টেম্বরে পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজে ক্যাম্পাসে আসেন। হল বন্ধ থাকায় তিনি মেসেই ওঠেন। সোমবার দুপুরে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে প্রীতিলতা হলের শিক্ষার্থী গৌরী প্রথম আলোকে বললেন, হলে প্রশস্ত কক্ষ, বড়সড় বারান্দা। আরামে থাকা যায়। কিন্তু মেসে সেটি সম্ভব নয়। পাশাপাশি হলে সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে জম্পেশ আড্ডা হয়। হল খোলায় দারুণ খুশি তিনি। গৌরীর মতোই খুশি একই হলের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ঘরবন্দীর জীবন শেষে চিরচেনা হলে ফিরলাম। পরিচিত সবাইকে দেখে ভালো লাগছে।’

এর আগে গত রোববার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, হল খোলার পর শুধু আবাসিক ও অনুমতিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবেন। আবাসিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী, তাঁদের আত্মীয় কিংবা অতিথি হলে অবস্থান করতে পারবেন না। এ ছাড়া হলে অবস্থানকালে কেউ সর্দি, জ্বর, কাশি কিংবা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত হলে জরুরি ভিত্তিতে হল কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, প্রায় চার বছর হলের আসন বরাদ্দ কার্যক্রম বন্ধ। আগে যে শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে হলের আসন বরাদ্দ নিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই হল ছেড়ে চলে গেছেন। মূলত স্নাতকোত্তরের অনেক শিক্ষার্থী এখন হলে নেই। তাঁদের জায়গায় এখন বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা আসনে উঠেছেন বলে অভিযোগ আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আবদুর রব হলের প্রাধ্যক্ষ রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, চার বছর ধরে আসন বরাদ্দ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে হলে থাকছেন। হল খুলে যাওয়ায় এখন বরাদ্দ কার্যক্রম শুরু করা হবে।