অনলাইন পাঠের বাইরে ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী

ফাইল ছবি

আজ মঙ্গলবার ‘মহামারি ও যুবসমাজ: চারটি নির্বাচিত জেলা থেকে জরিপ অনুসন্ধান’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও বেসরকারি সংস্থা একশনএইড এ জরিপ করে। দেশের যে চার জেলায় জরিপ পরিচালিত হয়, সেগুলো হলো কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, সাতক্ষীরা ও বরগুনা। গত বছরের ডিসেম্বরে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও সানেমের গবেষক মাহতাব উদ্দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাকালে কুড়িগ্রামের ৫৯ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন পাঠ নিতে পারেনি। সাতক্ষীরায় এই হার ৫৫ শতাংশ। বরগুনা ও রাজশাহীতে এই হার যথাক্রমে ৫১ দশমিক ৯ ও ৪১ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই হার ৪৯ দশমিক ৯ শতাংশ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের এই হার ৫৬ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা যায়, অনলাইন পাঠে অংশ নেওয়ার জন্য ৫৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর কোনো ডিজিটাল ডিভাইস ছিল না। শহর ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য করে দেখা গেছে, গ্রামে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীর এই সক্ষমতা ছিল না। শহরে এই হার ৪৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। মেয়ে শিক্ষার্থীদের বেলায় এই অক্ষমতার হার ৬৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ছেলে শিক্ষার্থীদের এই সুযোগ ছিল না ৫২ দশমিক ১৮ শতাংশের। সব সময় অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে ১২ দশমিক ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী।

সানেমের এই গবেষণায় শিক্ষা ছাড়াও পরিবারভিত্তিক আয়ের বর্তমান অবস্থা, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ সামাজিক কাজে যুবকদের অংশগ্রহণ নিয়েও তথ্য প্রকাশ করা হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, কোভিড দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে কতটা প্রভাব ফেলেছে, তা এই জরিপে উঠে এসেছে। গবেষণায় মানসিক স্বাস্থ্যকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে দারিদ্র্য হারের ক্ষেত্রে আগের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করলে সার্বিক তথ্য উঠে আসত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, করোনাকালে দেশের অর্থনীতি মারাত্মক বাধাগ্রস্ত হয়েছে। শুধু কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিলেই এই সংকট কাটিয়ে ওঠা যাবে না। এ জন্য অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করার মতো কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।

ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সানজিদা আক্তার, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব দিলরুবা শারমিন প্রমুখ অংশ নেন।