করোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে ইউজিসির গাইডলাইন

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)
ফাইল ছবি

করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে একটি ‘রিকভারি গাইডলাইন’ প্রণয়ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এতে শিক্ষাবর্ষের সময় কমানো, বিভিন্ন ধরনের ছুটি বাতিল, পুরো সিলেবাসে পাঠদান সম্পন্নসহ ছয়টি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে।

গাইডলাইনটি আজ মঙ্গলবার সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর এই এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে এসেছে।

বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও তাদের নানাবিধ জটিলতায় পড়তে হয়েছে। এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ দিন আটকে থাকা বর্ষ ও সেমিস্টার সমাপনী পরীক্ষাগুলো সশরীর নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। তবে দেশে আবার করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরিকল্পনা অনুযায়ী এসব পরীক্ষা নেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

এর আগে গত ৩১ মে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও উপাচার্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা ও বাস্তবতা অনুযায়ী একটি রিকভারি গাইডলাইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

গাইডলাইনে যা আছে

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত একাডেমিক ক্যালেন্ডারের সময়কাল উল্লেখযোগ্য ও গ্রহণযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে হবে।

সেমিস্টার বা টার্ম বা বার্ষিক পদ্ধতির ক্ষেত্রে ব্যবহারিক বিষয়সহ সব বিষয়ের ক্লাস, ক্লাস টেস্ট, অ্যাসাইনমেন্ট, কুইজ, সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা প্রচলিত সময়ের চেয়ে কম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন ছুটি কমানো যেতে পারে বা ছুটি পরিহার করা যেতে পারে।

প্রতিটি ক্লাসের (তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক) সময় বর্তমানের মতোই বলবৎ থাকবে, অর্থাৎ লেকচারের সময় কমানো যাবে না। তবে লেকচারের সংখ্যা কমানোর প্রয়োজন হলেও পুরো সিলেবাসের পাঠদান সম্পন্ন করতে হবে। একাডেমিক ক্যালেন্ডারের সময় কমানোর স্বার্থে ক্লাস টেস্ট, কুইজ, মিডটার্ম পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট বা টার্ম পেপারের মতো বিষয়গুলো নিয়ে নতুনভাবে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।

চূড়ান্ত পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক ছুটি, দুটি বিষয়ের পরীক্ষার মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান এবং বর্ষ, সেমিস্টার বা টার্মের মাঝের ব্যবধান কমানো যেতে পারে।

এ ছাড়া সর্বোপরি রিকভারি পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন পাওয়ার পর শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই অনুমোদিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার শিক্ষার্থীদের অবহিত করে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং প্রণীত একাডেমিক ক্যালেন্ডার বাস্তবায়নে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।