গবেষণা চুরি ঠেকাতে বিশেষ সফটওয়্যার কিনছে ইউজিসি

গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে অ্যান্টি–প্লাজিয়ারিজম সফটওয়্যার ‘টার্নিটিন’ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

গবেষণায় যেন কোনো ধরনের চৌর্যবৃত্তির ঘটনা না ঘটে, এ জন্য একটি সফটওয়্যার কিনছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে অ্যান্টি–প্লাজিয়ারিজম সফটওয়্যার ‘টার্নিটিন’ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি। সভায় গবেষণাপত্রে চৌর্যবৃত্তি মোকাবিলায় শিগগির টার্নিটিন সফটওয়্যার ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় জানানো হয়, টার্নিটিন সফটওয়্যার আইথেনটিক্যাট অংশ গবেষক ও শিক্ষকদের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ও ফিডব্যাক স্টুডিও দিয়ে শিক্ষার্থীদের থিসিস চৌর্যবৃত্তি বিষয়টি নির্ধারণ করা যাবে।

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, প্রাথমিকভাবে ৩০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ সফটওয়্যারের সেবা সরবরাহ করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এর ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে গবেষণার স্বত্ব সংরক্ষণ ও মৌলিকত্ব নিশ্চিত করা সহজ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার গবেষণা কার্যক্রমের গুণগত মান সংরক্ষণ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই সফটওয়্যার। তিনি আরও বলেন, এর লক্ষ্য হচ্ছে গবেষণায় যাতে কোনো ধরনের চৌর্যবৃত্তির ঘটনা না ঘটে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি মোটেও কাম্য নয়। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির করে দেশ খুব বেশি দূর এগোতে পারবে না।

ছবি: সংগৃহীত

সভার সভাপতি ইউজিসি সদস্য ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণাক্ষেত্রে চৌর্যবৃত্তির ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ–সংক্রান্ত নীতিমালা না থাকায় গবেষণা কার্যক্রমে চৌর্যবৃত্তির বিষয়টি সংজ্ঞায়িত করা যাচ্ছে না। তাই চৌর্যবৃত্তি শনাক্ত করতে একটি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। টার্নিটিন সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য দ্রুত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের জন্য এ সফটওয়্যারের একটি রোডম্যাপ করা হবে। তিনি আরও বলেন, গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির এ সফটওয়্যার ক্রয় সংস্থাপন বেশ ব্যয়বহুল। তাই এর সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিকে নজর রাখতে হবে।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন, ব্যবহারবিধি, ব্যয় নির্ধারণে পৃথক কমিটি গঠন করারও সিদ্ধান্ত হয়।

বর্তমানে ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব উদ্যোগে এ সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। টার্নিটিন সফটওয়্যারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দেওয়া হবে। এর ফলে এ সফটওয়্যার ব্যবহারের একটি চিত্র পাওয়া যাবে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহম্মেদ চৌধুরী ও ড. জাবেদ আহমেদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সেকেন্দার আলী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মশিউল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সায়েদুর রহমান, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামিম আল মামুন, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আক্তার হোসেন, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুন, ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন বিভাগের পরিচালক মো. কামাল হোসেন ও আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া যুক্ত ছিলেন।