বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নির্ভর করছে শিক্ষার্থীদের টিকার ওপর

করোনা টিকা
প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসের কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ১২ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে পরদিন ১৩ জুন থেকে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টিকা দেওয়ার ওপর।

আজ বুধবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর কথা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তিনি বলেন, স্কুল–কলেজ হয়তো আগেই খুলে দেওয়া যাবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি হয়তো টিকার ওপর খানিকটা নির্ভর করছে। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে চাওয়া হয়েছে। তবে ধরে নেওয়া যায়, যেহেতু শিক্ষার্থীদের বয়স ৪০-এর নিচে, তাই অধিকাংশই হয়তো টিকা নিতে পারেননি। তবে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিকল্প কী করা যায়, সেটা ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গের আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যাগুলো অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারবে।

আগের ঘোষণা অনুযায়ী ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়া সিদ্ধান্ত ছিল। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস হওয়ার কথা ছিল ২৪ মে থেকে। তার আগে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি করা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন

এর আগে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ছুটি বাড়ানোর কথা জানান। তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
ছবি: সংগৃহীত

এর আগের ঘোষণা অনুযায়ী ২৯ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। করোনাভাইরাসের কারণে ১৪ মাস ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ঘাটতি নিয়ে ওপরের ক্লাসে উঠছে। কতটুকু শিখল, সেটাও যাচাই করা যাচ্ছে না।

কয়েক দিন আগে একটি বেসরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসজনিত বন্ধে প্রাথমিকের ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিখতে না পারার বা শিক্ষণঘাটতির ঝুঁকিতে আছে। এমন অবস্থায় শিক্ষার এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার তাগিদ দিচ্ছেন শিক্ষাবিদেরা। তাঁদের অনেকে যেসব এলাকায় সংক্রমণ নেই বা কম, সেসব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ারও সুপারিশ করেছেন।

আরও পড়ুন

জানা গেছে, এর আগে সরকার করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে ২৩ মে থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং ভারতীয় ধরন নিয়ে উদ্বেগ থাকায় চলমান বিধিনিষেধ বৃদ্ধির চিন্তাভাবনার পাশাপাশি স্কুল-কলেজ খোলা পিছিয়ে ২৯ মে করা হয়েছিল।