বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে ধারাবাহিক আন্দোলন

ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ছবি: প্রথম আলো

ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে তাঁরা এ দাবি জানান।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পাশে অবস্থান নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মহব্বত হোসেনের সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে আমাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এ দীর্ঘ সময়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বাইরে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁদের কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি। কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার জন্যও কোনো রকম কার্যকর পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি।

এ সময় আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ আনাম বলেন, দেশের সবকিছু চললেও কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। আবাসিক হল খুললে নাকি করোনা বেড়ে যাবে। হলে করোনা থাকলে শিক্ষক কোয়ার্টারগুলোতে কি করোনা নেই?

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুমা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হোক, এটাই আমরা চাই। আমরা অনেক আশ্বাস পেয়েছি, আর আশ্বাস পেতে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে আমরা ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবিগুলো হচ্ছে— স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস খুলে দিতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন বর্ষের অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলো নিতে হবে, সংক্ষিপ্ত সময়ে সব বর্ষের ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে হবে, সেশনজট এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টিকার আওতায় আনতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য করোনা ইউনিট ও আইসোলেশনের ব্যবস্থা রাখা নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সিনেট ভবনের সামনে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। আগামীকাল বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (এসি) সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী মহব্বত হোসেন বলেন, ‘সভায় যেন ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসে, সে জন্য আমরা আগামীকালও কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’

আন্দোলনে প্রক্টরের বাধার অভিযোগ

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বাধার অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী মহাব্বত হোসেন জানান, ‘কর্মসূচির সময় প্রক্টর আমাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে। আমরা কার অনুমতি নিয়ে আন্দোলন করছি? প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা আমাদের মাইক ব্যবহার করতে বাধা দেন। তবে শিক্ষার্থীরা বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলন করেছে।’

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘এটা তেমন কিছু নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা-সমাবেশের জন্য অনুমতি-অনুমোদনের একটি ব্যাপার আছে। তারা অনুমতি নেয়নি, সেটিই তাদের বলেছিলাম।’