অমিতাভ বচ্চন বেচবেন অটোগ্রাফসহ পোস্টার, দিনেশ কার্তিক ম্যাচজয়ী ছয়ের ভিডিও

বলিউড সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন শিগগিরই নিজের নামে এনএফটি চালুর পরিকল্পনা করছেন
রয়টার্স

ভারতের চলচ্চিত্র ও ক্রিকেট তারকারা ঝুঁকছেন ‘ডিজিটাল স্মারকের’ দিকে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভার্চ্যুয়াল সম্পদে মানুষের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের কথা মাথায় রেখে স্মারকগুলো তাঁরা নন-ফানজিবল টোকেন বা এনএফটি হিসেবে বিক্রি করছেন ভক্তদের কাছে।

এনএফটিকে একধরনের ডিজিটাল সম্পদ কিংবা সম্পদের মালিকানার সনদ বলা যেতে পারে। এতে ডিজিটাল সম্পদের মালিকানা লিপিবদ্ধ করা হয় ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে। এই সম্পদ ছবি ও ভিডিও থেকে শুরু করে ডিজিটাল মাধ্যমে আদান-প্রদানযোগ্য যেকোনো কিছু হতে পারে। এ ধরনের সম্পদের জনপ্রিয়তা হু হু করে বেড়েছে সাম্প্রতিক সময়ে এবং সে জনপ্রিয়তা হুট করে কমে যাবে, তেমনটা মনে হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

বলিউড সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন ও সালমান খান শিগগিরই নিজেদের নামে এনএফটি চালুর পরিকল্পনা করছেন। বচ্চনের এনএফটিগুলোর মধ্যে অটোগ্রাফসহ তাঁর চলচ্চিত্রগুলোর পোস্টার রয়েছে। এরই মধ্যে টুইটারের ৪ কোটি ৩০ লাখ অনুসারীকে জানিয়ে এ ব্যাপারে আগ্রহ তৈরির চেষ্টা করছেন তিনি।

বলিউডনির্ভর এনএফটি মার্কেটপ্লেস বলিকয়েনের আয়ান অগ্নিহোত্রী বলেন, ‘বলিউডে এখন এনএফটি একদমই অচেনা, তবে আমি নিশ্চিত, তাঁরা (চলচ্চিত্র তারকা) এটাকে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখবেন, যেখানে বিদ্যমান কনটেন্টগুলো কাজে লাগিয়ে আয়ের নতুন পথ তৈরি হবে।’

অগ্নিহোত্রী আরও বলেন, চলতি মাসে চালুর কয়েক দিনের মধ্যে প্ল্যাটফর্মটির ২ কোটি বলিকয়েনের মধ্যে ৮০ লাখ বিক্রি হয়ে গেছে। প্ল্যাটফর্মটিতে এনএফটি বিক্রি শুরু হলে বলিকয়েন নামের ক্রিপ্টোটোকেনের বিনিময়ে সেগুলো কেনা যাবে। এক বলিকয়েনের দাম সাড়ে ৮ বা ৯ টাকার মতো। অবশ্য ভারতের চলচ্চিত্র তারকাদের জন্য ব্যাপারটা কেবল শুরু।

ক্রিকেট ম্যাচের ডিজিটাল রিল এনএফটি হিসেবে নিলামে তুলেছেন দিনেশ কার্তিক
দিনেশ কার্তিক/ইনস্টাগ্রাম

এদিকে একটি ক্রিকেট ম্যাচের ডিজিটাল রিল নিলামে তুলছেন ভারতীয় ক্রিকেটার দিনেশ কার্তিক। সে ম্যাচের শেষ বলে ছয় মেরে ভারতকে জিতিয়েছিলেন তিনি। ডিজিটাল রিলটির প্রাথমিক দর ঠিক করা হয়েছে ৫ ইথেরিয়াম (একধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি, যার প্রতিটির দাম প্রায় ২০ হাজার ডলার)। তবে এখন পর্যন্ত কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেনি বলে জানিয়েছেন দিনেশ কার্তিক।

রয়টার্সকে কার্তিক বলেন, ‘গত এক বছরে পশ্চিমা দেশগুলোয় এনএফটি জনপ্রিয় হয়েছে। ভক্তরা এখন ডিজিটাল মাধ্যমে বাস্কেটবলের অনেক স্মারক কিনছেন। সেখান থেকেই ধারণাটি আসে।’

অবশ্য অন্যান্য খাতে এরই মধ্যে ধারণাটি জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। ভারতের শীর্ষ ফ্যাশন ডিজাইনারদের একজন মণীশ মালহোত্রা। সম্প্রতি তিনি এনএফটিতে তাঁর আইকনিক নকশার কিছু ডিজিটাল স্কেচ বিক্রি করেছেন প্রতিটি ৪ হাজার ডলার করে। অথচ তাঁর ওয়েবসাইট থেকে যে কেউ তাঁর নকশায় করা বিয়ের পোশাক কিনতে পারে আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

অনেকে অবশ্য এনএফটির বিপক্ষে মত দিয়েছেন। কেবল অনলাইনে দেখা যায় কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরের কোনো পণ্যের জন্য এত অর্থ খরচের কোনো ব্যাখ্যা তাঁরা পান না।

তবু বিশ্বব্যাপী এনএফটি বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। বাজার বিশ্লেষক ড্যাপর‍্যাডারের তথ্য বলছে, চলতি বছরের কেবল তৃতীয় প্রান্তিকে ১ হাজার ৭০ কোটি ডলারের এনএফটি বিক্রির খবর মিলেছে, আগের বছরের একই মেয়াদের তুলনায় যা ৮ গুণ।