আইফোনের সঙ্গে চার্জার কেন নয়, কারণ জানাল অ্যাপল

আমেরিকান টেক জায়ান্ট অ্যাপল গত বছর ঘোষণা দিয়েছিল, তারা আইফোনের সঙ্গে আর চার্জার অ্যাডাপ্টর দেবে না। এ খবর সামনে আসার পর অনেকে অ্যাপলের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিল। আইফোনের দাম এত বেশি, তার ওপর সঙ্গে চার্জার না মিললে অসন্তোষ তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। অ্যাপল এবার জানিয়ে দিল চার্জার অ্যাডাপ্টর না দেওয়ার কারণ। কারণটা প্রাকৃতিক।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম গেজেটস নাউ ও বিজনেস টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইফোনের সঙ্গে চার্জার না দেওয়ার কারণ জানিয়েছে অ্যাপল। অ্যাপল বলছে, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক কারণে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর চার্জার না দেওয়ায় এর প্রভাব প্রকৃতির ওপর কীভাবে পড়ছে, তারও বিস্তারিত বর্ণনাও দিয়েছে অ্যাপল।

অ্যাপলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাওয়ার অ্যাডাপ্টারে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে আছে প্লাস্টিক, কপার, টিন ও জিংক। এসব উপকরণ পরিবেশদূষণের জন্য দায়ী। এ কারণে চার্জার সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইফোন বক্সে চার্জিং অ্যাডাপ্টর না দেওয়ার মাধ্যমে ৮ দশমিক ৬১ লাখ টন কপার, জিংক ও ধাতু সাশ্রয় হয়। এর মানে হলো এগুলো সরবরাহ বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে পরিবেশবিপর্যয়ের মাত্রা কিছুটা হলেও কমেছে। এ ছাড়া চার্জার ছাড়া আইফোনের বাক্সটির আকারও ছোট হয়ে যায়, ফলে অ্যাপল মনে করে সম্পূর্ণ প্যাকিং প্রক্রিয়াও অনেক সহজসাধ্য এবং দ্রুত হয়।

এ বিষয়ে অ্যাপলের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘চার্জার না দেওয়ার বিষয়টি ছিল অ্যাপলের সাহসী এক সিদ্ধান্ত এবং আমাদের গ্রহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।’

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আমেরিকার কুপার্টিনো শহরে অ্যাপলের অফিস। সেই শহরে ২০১৯ সালে কার্বন ডাই–অক্সাইড নির্গমনকে ২৫ দশমিক ১ মিলিয়ন টন থেকে ২২ দশমিক ৬ মিলিয়ন টনে নামিয়ে এনেছিল।

এ ছাড়া ২০২০ সালে অ্যাপল ম্যাক ডিভাইসগুলোর জন্য নিজস্ব এমওয়ান চিপ চালু করেছে। এর ফলে অ্যাপল দাবি করছে, সামগ্রিক কার্বন ফুটপ্রিন্টের পরিমাণ ৩৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অ্যাপল বলছে, তারা অষ্টম জেনারেশন আইপ্যাডের জন্য আরও বেশি এনার্জি এফিসিয়েন্ট চার্জারে পরিবর্তিত হয়েছে—এটি এমন একটি পদক্ষেপ, যার জন্য এনার্জি স্টার রেটিং অনুযায়ী প্রয়োজনের তুলনায় ৬৬ শতাংশ কম শক্তি ব্যয় হয়। গত ১২ বছরে তারা তাদের উৎপাদিত সমস্ত পণ্যের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিকে ৭০ শতাংশের বেশি হ্রাস করেছে।