উইঘুর নিয়ে চীনের বিতর্কিত পোস্ট মুছে ফেলল টুইটার

উইঘুর নারীদের নিয়ে করা এক টুইট সরিয়ে ফেলেছে টুইটার
ছবি: টুইটার

চীনের মুসলিম জনগোষ্ঠী উইঘুরদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা দূতাবাসের একটি বিতর্কিত পোস্ট মুছে ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার। উইঘুর নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করাকে সমর্থন করে ওই টুইট করা হয়েছিল।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, চীনের শিনচিয়াংয়ে উইঘুর গোষ্ঠীর নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করাকে সমর্থন করে একটি টুইট করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে চীনা দূতাবাস থেকে। দূতাবাসের ওই টুইটে বলা হয়, চীন সরকারের নীতি গ্রহণের ফলে উইঘুর নারীরা ‘মুক্তি’ পেয়েছেন। পোস্টে চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের একটি লিংক জুডে দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রবন্ধে দাবি করা হয়েছে, ধর্মীয় চরমপন্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় উইঘুর নারীরা এখন আর ‘বাচ্চা উৎপাদনের মেশিন’ নন।

চীনের পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত স্বর্ণ, তেল ও গ্যাসসম্পদে সমৃদ্ধ শিনচিয়াং প্রদেশে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এরাই উইঘুর মুসলমান
ছবি: এএফপি

উইঘুরদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে তাদের নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যা করে দেওয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগ চীনের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই আছে। যদিও বেইজিং এ অভিযোগ অস্বীকার করে।

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা দূতাবাসের ওই টুইটে বেইজিংয়ের নীতির প্রতিফলন দেখা গেল। বৃহস্পতিবার পোস্ট করা টুইটে বলা হয়, সরকারি নীতি গ্রহণের ফলে উইঘুর নারীরা এখন আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং স্বাধীন। প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁদের উৎসাহী করে তোলার ফলাফল এটি। সপ্তাহ পরে ওই টুইটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় টুইটার। তাদের নীতি লঙ্ঘন করে চীনা দূতাবাস টুইট করেছে বলে জানায় টুইটার।

চীনের বিভিন্ন শিবিরে উইঘুরদের গণহারে আটক করে রাখা হয়
ছবি: রয়টার্স

চীনের পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত স্বর্ণ, তেল ও গ্যাসসম্পদে সমৃদ্ধ শিনচিয়াং প্রদেশে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাঁরা উইঘুর মুসলমান। তাঁরা চীনা নয়, তুর্কি ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত উইঘুর ভাষায় কথা বলেন। বিচ্ছিন্নতাবাদ ও ধর্মীয় জঙ্গিবাদের হিংসাত্মক তৎপরতা রয়েছে এই প্রদেশে। উইঘুর জঙ্গিদের প্রধান সংগঠন ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টকে (ইআইটিএম) যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করেছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র শিনচিয়াংয়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও উইঘুরদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে উচ্চকিত। অভিযোগ রয়েছে, কয়েক মাস ধরে উইঘুরসহ অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে শিনচিয়াং প্রদেশ থেকে আটক করা হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো জাতিসংঘ কমিটির কাছে প্রতিবেদন দিয়েছে যে চীনের বিভিন্ন শিবিরে উইঘুরদের গণহারে আটক করা হচ্ছে। সেখানে বন্দীদের চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য বাধ্য করা হয়।

আরও পড়ুন