এক ম্যালওয়্যারে ১২ কোটির বেশি আইফোন ও আইপ্যাড আক্রান্ত

ফোর্টনাইট গেমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এপিক গেমসের সঙ্গে এক মামলার শুনানিতে বেরিয়ে আসে চমকপ্রদ সব খবর
রয়টার্স

একটি ম্যালওয়্যারে (ক্ষতিকর সফটওয়্যার) আক্রান্ত আড়াই হাজারের বেশি অ্যাপ নামিয়েছেন সব মিলিয়ে ১২ কোটি ৮০ লাখ আইওএস ব্যবহারকারী। ‘এক্সকোডগোস্ট’ নামের ম্যালওয়্যারটি আইফোন ও আইপ্যাডে ছড়িয়ে পড়ে ২০১৫ সালে। ‘এপিক গেমস বনাম অ্যাপল’ মামলার শুনানিতে বেরিয়ে আসে এ তথ্য।

এক্সকোডগোস্ট ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত অ্যাপগুলো তখন আপাতদৃষ্টিতে ভালো মনে হলেও সেগুলো ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিতে পারত। হ্যাকার ২০১৫ সালে ম্যালওয়্যারটি ছড়িয়ে দিলেও তা দ্রুত রুখে দেওয়া হয়। তবে ঠিক কতগুলো ডিভাইস আক্রান্ত হয়েছিল, বা কেমন ক্ষতি করেছিল, তা অস্পষ্ট ছিল এত দিন।

এপিক বনাম অ্যাপল মামলার শুনানির অংশ হিসেবে প্রকাশিত ই-মেইলে সেই হ্যাকিং কার্যক্রম সম্পর্কে তুলনামূলক পরিষ্কার ধারণা মিলল এবার। অ্যাপ স্টোরের আড়াই হাজার অ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এক্সকোডগোস্ট। আর সেসব অ্যাপ নামান ১২ কোটি ৮০ লাখ ব্যবহারকারী। ভাইস সাময়িকীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ব্যবহারকারীর ১ কোটি ৮০ লাখের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রে।

অ্যাপল ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে সময় হ্যাকিং কার্যক্রমটির ব্যাপকতা কম দেখানোর চেষ্টা করেছে অ্যাপল। পাশাপাশি তা সম্পর্কে আক্রান্তদের ঠিকঠাকভাবে জানানো হয়নি বলেও প্রকাশিত ই-মেইলগুলোয় উঠে আসে।

অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাট ফিশার এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘যেহেতু এত বেশি পরিমাণে গ্রাহক আক্রান্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হয়, তাঁদের সবাইকে কি আমরা ই-মেইল করতাম? এখানে ভেবে দেখা জরুরি, ব্যবহারকারীদের স্থানীয় ভাষায় ই-মেইল পাঠানো নিয়ে একটা জটিলতায় পড়তাম আমরা। কারণ অ্যাপ স্টোর থেকে আক্রান্ত অ্যাপগুলো বিশ্বের নানা প্রান্তের ব্যবহারকারী নামিয়েছেন।’

২০১৫ সালে অ্যাপের মাধ্যমে ১২ কোটি ৮০ লাখ আইফোন ও আইপ্যাডে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দেয় হ্যাকাররা
আনস্প্ল্যাশ

অ্যাপলের আইটিউনস কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স ব্যবস্থাপক ডেল ব্যাগওয়েলও সে বিষয়ে সম্মত হয়েছিলেন। তিনি লেখেন, ‘এত বেশি গ্রাহককে একসঙ্গে ই-মেইল করার মতো প্রয়োজনীয় টুলের ব্যবস্থা আমরা করেছিলাম। তবে প্রত্যেক গ্রাহককে তাঁদের নামানো আক্রান্ত অ্যাপের নাম উল্লেখ করা নিয়ে আমরা বেশ জটিলতার মুখে পড়ি।’

তা ছাড়া ১২ কোটি গ্রাহককে ই-মেইল পাঠাতে প্রায় এক সপ্তাহ লেগে যেত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ম্যালওয়্যারটি অ্যাপ স্টোরে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়লেও, সেটি খুব বেশি ভয়ংকর ছিল না। সে সময় অ্যাপল বলেছিল, কোনো ব্যবহারকারীকে ব্যক্তিগতভাবে শনাক্ত করা যায়, এমন তথ্য হ্যাকারদের হাতে পৌঁছেছে, এমন তথ্য অ্যাপলের কাছে নেই।

সে ঘটনার পর ‘সোর্সডিএনএ’ নামের ম্যালওয়্যার শনাক্তে বিশেষায়িত একটি প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করে অ্যাপল।