কম খরচে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন

নতুন অ্যান্টিবডি পরীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন গবেষকেরা
ছবি: রয়টার্স

কোভিড-১৯–এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য জাপানি বিজ্ঞানীরা একটি দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও স্বল্প মূল্যের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।

এতে চিপভিত্তিক পরীক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা নিখুঁতভাবে প্লাজমায় উপস্থিত অ্যান্টিবডির ঘনত্ব পরিমাপ করতে সক্ষম হবে। বার্তা সংস্থা আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগের একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা যে কোভিড–১৯ অ্যান্টিবডি বা প্রোটিন তৈরি করে, তা সংক্রমণের শেষের ধাপের দিকে উপস্থিত থাকে এবং রোগমুক্তির পরেও রক্তে তা থেকে যায়। এতে আগে কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত হয়ে থাকলে তাকে শনাক্ত করা যায়।

জাপানের গবেষকদের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা পদ্ধতিসংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘বায়োসেন্সরস অ্যান্ড বায়োইলেকট্রনিকস’ সাময়িকীতে।

গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করোনার সম্পূর্ণ বিস্তার নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। জনস্বাস্থ্য নীতি পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে পারে।

গবেষণা নিবন্ধের লেখক জাপানের ওকিনাওয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্নাতক বিশ্ববিদ্যালয়ের (ওআইএসটি) গবেষক রিকার্ডো ফানারি বলেন, অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য বিদ্যমান অনেক প্ল্যাটফর্ম নির্ভুল এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারলেও তা ব্যয়বহুল এবং প্রশিক্ষিত কর্মী দিয়ে পরীক্ষাগারে নির্ণয় করতে হয়। এতে ফল পেতে অনেক সময় কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন লেগে যেতে পারে।

গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাঁরা নির্ভুল অ্যান্টিবডি নির্ণয় পদ্ধতির পাশাপাশি একে সাশ্রয়ী করতে বিকল্প অ্যান্টিবডি পরীক্ষার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন, যাতে শক্তিশালী লাইট সেন্সিং প্রযুক্তি ও মাইক্রোফ্লুয়িডিক চিপসেট থাকে। এ চিপটি ৩০ মিনিটেই ফলাফল জানাতে পারে।

চিপটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়া সর্বনিম্ন ঘনত্বের অ্যান্টিবডিও শনাক্ত করতে পারে। এ চিপ তৈরি করতে খরচ কম। এ ছাড়া এটি চালাতে কোনো পরীক্ষাগার বা পরিচালন কর্মীর প্রয়োজন পড়ে না। ফলে দেশব্যাপী পরীক্ষার সম্ভাব্যতা বৃদ্ধি করবে।

গবেষকেরা বলেন, এই নতুন প্ল্যাটফর্মের আরও একটি স্বতন্ত্র সুবিধা রয়েছে। এটি কেবল অ্যান্টিবডির উপস্থিতি শনাক্ত করে না, এর পাশাপাশি অ্যান্টিবডির সংখ্যাও বলে দিতে পারে। অর্থাৎ এটি পরিমাণগত তথ্য দিতে সক্ষম।

গবেষণা প্রবন্ধের সহযোগী লেখক অ্যামি শিন বলেন, ফাইবার অপটিক লাইটের সঙ্গে মাইক্রোফ্লুয়িডিক চিপ ব্যবহার করে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়। একটি সিরিঞ্জ পাম্প ব্যবহার করে নমুনা চিপে টানা হয়। প্লাজমা প্রোটিন চিপে যুক্ত সোনার প্রলেপের ন্যানো স্পাইকের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডি স্পাইক প্রোটিনে আটকে থাকে। ফাইবার অপটিক লাইট তা শনাক্ত করে ফেলে।

শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াটি সহজ হলেও যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মনে করছেন গবেষকেরা। অবশ্য কবে নাগাদ অ্যান্টিবডি পরীক্ষার এ পদ্ধতিটি চালু হবে, এখনো তা জানানো হয়নি।