ড্রোনে কুপোকাত মাদক চোরাকারবারি

ড্রোনে ধারণ করা ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করা হয়
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

চীনে ড্রোনের সাহায্যে মাদক চোরাকারবারি আটকে দিয়েছে পুলিশ। প্রথমে ড্রোন-ফুটেজ দেখে দুর্বৃত্তদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়, এরপর ওই ড্রোন পিছু নেয় তাদের। আর ফুটেজ দেখে পুলিশ গিয়ে পাকড়াও করে দুর্বৃত্তদের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।

চীনা টিভি চ্যানেল সিসিটিভিতে ভিডিও ফুটেজটি দেখানো হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলেছেন, ড্রোনের সঙ্গে শুধু ক্যামেরা নয়, অস্ত্রও যুক্ত করা দরকার। এতে অন্যান্য অপরাধকর্ম রোধেও ড্রোন ব্যবহার করা যাবে।

আর মানুষের গোপনীয়তার অধিকার নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে মানুষের ওপর নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ড্রোনে ধারণ করা ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সেটি দেখে দক্ষিণ চীনের শহর গুইলিনের এক পরিত্যক্ত ইটভাটায় পৌঁছে পুলিশ। ভিডিওতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কিছু হস্তান্তর করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ জানিয়েছে, সেগুলো ছিল মাদক।

এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ১৭ বছর ধরে পলাতক এক ব্যক্তির অবস্থান ড্রোনের সাহায্যে শনাক্ত করা হয়। চীনের ইউনান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক গুহায় লুকিয়ে ছিলেন তিনি।

ড্রোনে নজরদারির ব্যাপারে সোচ্চার হচ্ছে অনেক মানবাধিকার সংগঠন
ছবি: রয়টার্স

তবে ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন বিগ ব্রাদার ওয়াচের পরিচালক সিলকি কারলো পুলিশের এই উদ্যোগকে বলছেন ‘নজরদারির প্রযুক্তির সাহায্যে অনধিকারচর্চা’। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে নাগরিকদের ওপর নজরদারিতে যুক্তরাজ্য ও চীন যেভাবে পাল্লা দিয়ে এগোচ্ছে, এ ব্যাপারই সবচেয়ে দুশ্চিন্তার। করোনার প্রাদুর্ভাবে লকডাউনের সময় আমরা দেখেছি, ইংল্যান্ডের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পথচারীর ওপর ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি বাড়িয়েছে সরকার।’

ড্রোনের সাহায্যে পুলিশের নজরদারি কমাতে নীতিনির্ধারকদের আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকে চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে নানা ধরনের মন্তব্য এসেছে। এমনকি অনেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রতি খানিকটা সহানুভূতিও দেখিয়েছেন। আবার কেউ কেউ কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন।

করোনা মহামারির সময়ে চীনে ড্রোনের ব্যবহারে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে কেউ নাক-মুখ না ঢেকে ঘর ছেড়ে বেরোলে ড্রোনের সাহায্যে তা শনাক্ত করে লাউডস্পিকারে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। স্পেনসহ ইউরোপের অনেক দেশে একই ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।