নীতিমালা বদলে বিপদে হোয়াটসঅ্যাপ

বিভ্রান্ত হয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা সিগন্যাল কিংবা টেলিগ্রামের মতো বিকল্প অ্যাপ বেছে নেওয়া শুরু করেছে
রয়টার্স

হোয়াটসঅ্যাপ তাদের নীতিমালায় পরিবর্তন এনেছে ঠিকই, তবে সে নীতিমালায় কী আছে, তা ঠিকঠাক ব্যাখ্যা করতে পারেনি। এতে বিভ্রান্ত হয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা সিগন্যাল কিংবা টেলিগ্রামের মতো বিকল্প অ্যাপ বেছে নেওয়া শুরু করে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপর্যয় বড় বলেই নীতিমালা বাস্তবায়নের দিনক্ষণ পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। সে সঙ্গে ক্ষতি কমাতে এখন ব্যবহারকারীদের ব্যাখ্যা দিতে দিতে প্রতিষ্ঠানটির কর্তাদের নাকাল হওয়ার জোগাড়।

ব্রিটিশ সংসদের স্বরাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির দেওয়া তথ্যে উল্লেখ করা হয়, জানুয়ারির কেবল প্রথম তিন সপ্তাহে সিগন্যাল অ্যাপে ৭৫ লাখ নতুন ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছে। আর টেলিগ্রামে ব্যবহারকারী বেড়েছে আড়াই কোটি। হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে যাওয়া ব্যবহারকারীরাই ওই দুটি অ্যাপে যোগ দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি বার নামানো অ্যাপের তালিকায় এ মাসের শুরুতে ৮ নম্বরে ছিল হোয়াটসঅ্যাপ। অথচ ১২ জানুয়ারিতে পিছিয়ে ২৩ নম্বরে চলে যায়।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের প্রথম এক হাজার অ্যাপের তালিকায় ৬ জানুয়ারিতেও ছিল না সিগন্যাল। অথচ দিন তিনেক পরই সেটি সবচেয়ে বেশি নামানো অ্যাপের তালিকার শীর্ষে পৌঁছে যায়।

হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে ভুল বার্তা হোয়াটসঅ্যাপেই ছড়িয়েছে বেশি
এএফপি

ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় হোয়াটসঅ্যাপের পাবলিক পলিসিবিষয়ক পরিচালক নিয়াম সুয়িনি মনে করেন, এভাবে হুট করে ব্যাপক হারে ব্যবহারকারী কমার কারণ সম্ভবত তাঁদের নীতিমালা হালনাগাদ। তিনি বলেছেন, সে হালনাগাদের কারণ মূলত দুটি। এক. ব্যবসায়িক যোগাযোগে নতুন সুবিধা চালু। দুই. প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যমান নীতিমালা পরিষ্কার করা। সুয়িনি বলেছেন, ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগিতে কোথাও কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে লেখা ছিল, নতুন নীতিমালায় ব্যবহারকারীর বার্তা পড়ার সুযোগ পাবে হোয়াটসঅ্যাপ এবং সে তথ্য সরাসরি পৌঁছে যাবে হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের কাছে। মজার কিংবা দুঃখের ব্যাপার হলো, সে পোস্ট সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই।

ব্যবহারকারীর তথ্যের সুরক্ষার কথা যদি বলা হয়, তবে প্রতিদ্বন্দ্বী টেলিগ্রামের চেয়ে এগিয়েই থাকবে হোয়াটসঅ্যাপ। কারণ, অ্যাপটিতে ‘অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড এনক্রিপশন’ সুবিধা আছে। এতে ব্যবহারকারীর পাঠানো বার্তা হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের গোচরে আসার কথা না। অন্যদিকে টেলিগ্রামে সে সুবিধা কন্টাক্ট তালিকার প্রত্যেকের জন্য আলাদা করে চালু করে নিতে হয়।