যুক্তরাষ্ট্রে তিন লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করেছে আইওএস অ্যাপ

আইপ্যাডে সুইফট প্লেগ্রাউন্ড অ্যাপে প্রোগ্রামিং শিখছে খুদে শিক্ষার্থীরা। অ্যাপল বলছে, এভাবে ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য কর্মীবাহিনী তৈরি করছে তারা
ছবি: অ্যাপল

অর্থনীতিতে করোনাভাইরাস বড় বাধা তৈরি করেছে। চাকরির বাজারেও পড়েছে বড় প্রভাব। এসব চ্যালেঞ্জ তো রয়েছেই। তবু অ্যাপল বলছে, ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্রে তিন লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করেছে আইওএস অ্যাপ ইকোনমি।

অ্যাপ ইকোনমি কী

২০০৮ সালে আইফোন এবং আইপ্যাডের জন্য অ্যাপ স্টোর চালু করে অ্যাপল। আর অ্যান্ড্রয়েডের জন্য গুগল আনে প্লে স্টোর। অ্যাপ তৈরি থেকে শুরু করে ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে পৌঁছানো এবং এর পরবর্তী সেবাগুলোর সঙ্গে অনেক কর্মসংস্থান জড়িত। অ্যাপ অনেক উদ্যোক্তা তৈরি করেছে, শুধু অ্যাপকেন্দ্রিক অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আবার বিজ্ঞাপনী আয়ের ওপর নির্ভর করে অনেক মুক্ত পেশাজীবী সফটওয়্যার নির্মাতা (ডেভেলপার) দিব্যি জীবিকা নির্বাহ করছে। অর্থনীতিতে অ্যাপ ইকোসিস্টেমের সার্বিক অবদানকে বলা হচ্ছে অ্যাপ ইকোনমি। আর শুধু আইফোনের অপারেটিং সিস্টেম আইওএসনির্ভর হলে বলা হয় আইওএস অ্যাপ ইকোনমি।

অ্যাপল জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অনেকে কাজ হারালেও অ্যাপ নির্মাতাদের কাজে তার প্রভাব পড়েনি। অ্যাপ স্টোর ইকোসিস্টেম যুক্তরাষ্ট্রে ২১ লাখ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। গত বছরের তুলনায় যা ১৫ শতাংশ বেশি। আর দেশটিতে অ্যাপল সার্বিকভাবে ২৭ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে।

সব কাজের অ্যাপ

অ্যাপ স্টোরের শুরু থেকেই অ্যাপল বারবার বলেছে, অ্যাপ স্টোরে সব ধরনের কাজের জন্য অ্যাপ আছে। সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে আবারও। সেই সঙ্গে রেস্তোরাঁ থেকে খাবারের ফরমাশ দেওয়া থেকে শুরু করে দূরশিক্ষণ, টেলিমেডিসিন কিংবা ডিজিটাল বিপণন—অর্থাৎ করোনাকালে যে সেবাগুলো বেশি লাগছে, সেগুলোতে এবার গুরুত্ব দিয়েছে অ্যাপল।

অ্যাপল যদিও বলছে, ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই চাকরির নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে আইওএস অ্যাপ ইকোনমি, তবে দেশটির পশ্চিম ও পূর্ব তীরের অঙ্গরাজ্যগুলোতে যেমন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, মাঝেরগুলোতে তেমন নয়।

তথ্যচিত্র: অ্যাপল

জোর দিচ্ছে প্রোগ্রামিং শিক্ষায়

অ্যাপ ইকোনমি বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা-কার্যক্রমে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে অ্যাপল, যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য প্রোগ্রামিং শিক্ষায় জোর দিচ্ছে। এর মূল কারণ হলো ভবিষ্যতের অর্থনীতি তথ্যপ্রযুক্তির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল হবে বলে মনে করে তারা। আর সে কারণেই ভবিষ্যতের জন্য প্রোগ্রামার তৈরি করছে। পাশাপাশি ‘সুইফট প্লেগ্রাউন্ড’ নামে অ্যাপ তৈরির সেবা আছে অ্যাপলের। এর সাহায্যে সহজে প্রোগ্রামিং কোড লেখা যায়, অ্যাপ তৈরি করা যায়। এদিকে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৯ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোডিং শেখার জন্য অ্যাপলের শিক্ষাসূচি অনুসরণ করা হয় বলেও জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে অ্যাপলের ৯০ হাজার কর্মী রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৯ হাজার সরবরাহকারীর পণ্য ও সেবা ব্যবহার করে থাকে অ্যাপল। এদের মাধ্যমে আরও সাড়ে চার লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ করেছে তারা। পাঁচ বছরে মার্কিন অর্থনীতিতে ৩৫ হাজার কোটি ডলার অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এখন সে পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।