স্মার্টওয়াচ কিনবেন যা দেখে
দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্মার্টওয়াচ। কেউ শরীর ঠিক রাখতে, কেউ স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত ফিচারগুলোর জন্য, আবার কেউ স্টাইলের কথা ভেবে স্মার্টওয়াচে ঝুঁকছেন। তবে স্মার্টওয়াচ কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশলী না হলে গ্যাজেট হিসেবে এটি কাজে আসবে না।
প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞরা তাই স্মার্টওয়াচ কেনার আগে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলেছেন। এর মধ্যে রয়েছে অপারেটিং সিস্টেম, ডিসপ্লে বা বিভিন্ন ফিচার। জেনে নিন বিষয়গুলো:
অপারেটিং সিস্টেম: স্মার্টওয়াচ কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এটি ফোনের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায় কি না এবং কোন অপারেটিং সিস্টেমে চলে, তা ঠিক করা। যাঁদের হাতে যে ধরনের স্মার্টফোন থাকবে, তাঁদের সে অনুযায়ী স্মার্টওয়াচ কেনা সুবিধার।
যাঁরা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন, তাঁরা যদি অ্যাপল ওয়াচ কিনতে চান, তবে খুব বেশি কাজে লাগাতে পারবেন না। অ্যাপল ওয়াচ আইফোনের সঙ্গে কাজ করে। এতে থাকে ওয়াচওএস। অন্যদিকে স্যামসাং গ্যালাক্সি স্মার্টওয়াচগুলো চলে টাইজেন ওএসে। গুগলের ওয়্যার ওএস ব্যবহৃত হয় ফসিল, এলজিসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচে। ফিটবিটের স্মার্টওয়াচ অবশ্য অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন উভয়ই সমর্থন করে।
ডিসপ্লে: স্মার্টওয়াচ কেনার আগে ডিসপ্লের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। বাজারে এখন রিয়েলমি ও অপোর মতো ব্র্যান্ডগুলো স্মার্টওয়াচ বাজারে আনছে। ফলে ক্রেতাদের সামনে নতুন নতুন পণ্য পছন্দ করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তবে কেনার আগে ডিসপ্লে ভেদে দামের তারতম্য দেখতে পাবেন।
নিজের বাজেটের দিকে খেয়াল রেখে স্মার্টওয়াচ কিনতে পারেন। মনে রাখতে হবে, অ্যাপল ওয়াচে ও স্যামসাং গ্যালাক্সি ওয়াচে ব্যবহৃত হয় ওএলইডি ডিসপ্লে। অন্যান্য ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রেও ডিসপ্লের ধরন দেখে নিতে হবে।
ফিটনেস ফিচার: অনেকের স্মার্টওয়াচ কেনার লক্ষ্য থাকে শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে ওয়াচ সাহায্য করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে তাই স্মার্টওয়াচ কেনার আগে এতে দরকারি ফিচারগুলো আছে কি না, তা ভাবা দরকার।
অনেক স্মার্টওয়াচে এখন হৃৎস্পন্দন মাপার সুবিধা যুক্ত হচ্ছে। এ সুবিধা যে স্মার্টওয়াচে নেই, তা কেনা ঠিক হবে না। স্মার্টওয়াচে জিপিএস থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সাইকেল চালানো, হাঁটার মতো বিভিন্ন কাজের সময় জিপিএস কাজে লাগবে। অনেক স্মার্টওয়াচে ঘুমের তথ্য সংগ্রহের ফিচার থাকে। অনেক ক্রেতা এখন এ ফিচারটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।
অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা: স্মার্টওয়াচ ছোট হলেও অ্যাপ স্টোরে এ ডিভাইসকেন্দ্রিক অনেক অ্যাপ রয়েছে। অনেক স্মার্টওয়াচে স্পোর্ট অ্যাপ, উবার, হোয়াটসঅ্যাপ কাস্টমাইজড করা থাকে।
অ্যাপল ওয়াচের মতো স্যামসাং ওয়াচেও নানা অ্যাপ পাওয়া যায়। গুগল ওয়্যার ওএসভিত্তিক স্মার্টওয়াচের জন্য অনেক অপটিমাইজড অ্যাপ পাওয়া যাবে। যে স্মার্টওয়াচে দরকারি অ্যাপ বেশি সমর্থন করে, সেটা কেনাই যুক্তিযুক্ত হবে।
ব্যাটারি: স্মার্টওয়াচ কেনার আগে সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে এর ব্যাটারি সক্ষমতার দিকে। ফিটনেস ব্র্যান্ডগুলোর মতো স্মার্টওয়াচে দীর্ঘসময় চার্জ থাকে না।
অ্যাপল ওয়াচে মাত্র ১৮ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকে। স্মার্টওয়াচ কেনার আগে এটি কোন কাজে ব্যবহার হবে এবং কতক্ষণ চার্জ থাকলে সুবিধা হবে, তা বিবেচনা করা জরুরি।
দাম: স্মার্টওয়াচ এখন অনেকের হাতের নাগালেই চলে এসেছে। বাজেট যদি সাশ্রয়ী হয়, তবে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি অনেক ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচ বাজারে পাওয়া যাবে।
বাজেট যদি মাঝারি হয়, তবে ফিটবিট, ফসিলের মতো ব্র্যান্ডের দিকে যেতে পারেন। যাঁরা প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচের কথা ভাবছেন, তখন অ্যাপল, স্যামসাংসহ প্রতিষ্ঠিত অনেক ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচ দেখতে পারেন।