হঠাৎ সবাই ডালগোনা ক্যান্ডিতে মেতেছেন কেন

মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন লি জুং-জে
নেটফ্লিক্স

চিনি গলিয়ে তাতে বেকিং সোডা মিশিয়ে বানানো হয় ডালগোনা ক্যান্ডি। স্বাদের জন্য হানিকম্ব টফিও বলা হয়। স্ট্রিট ফুড হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় বছরের পর বছর ধরে বিক্রি হয়ে আসছে, বেশি জনপ্রিয় ছিল গত শতকের সত্তর ও আশির দশকে। তবে নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় দক্ষিণ কোরীয় সিরিজ ‘স্কুইড গেম’-এর বদৌলতে হঠাৎ করে আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডালগোনা ক্যান্ডি। বেড়েছে বিক্রিও।

‘স্কুইড গেম’-এর তৃতীয় পর্বে দেখানো হয়, প্রতিটি ক্যান্ডিতে বিভিন্ন আকৃতি আঁকা। খেলায় অংশগ্রহণকারীদের নির্ধারিত সময় ফুরানোর আগেই সুই দিয়ে খোদাই করে ওই আকৃতি আলাদা করতে হয়। আকৃতি ভেঙে গেলে বা নির্ধারিত সময় ফুরিয়ে গেলে ওই অংশগ্রহণকারীকে মেরে ফেলা হয়। এই হলো নিয়ম।

বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘স্কুইড গেম’ যত জনপ্রিয় হচ্ছে, তত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ডালগোনা ক্যান্ডি। টিকটকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীরা মেতেছেন নতুন চ্যালেঞ্জে। কোরীয় ভাষার সিরিজটির প্রচার শুরুর সপ্তাহ কয়েকের মধ্যে টিকটকে ডালগোনা হ্যাশট্যাগ (#dalgona) ১৪০ কোটির বেশি মানুষ দেখেছে। খানিক পিছিয়ে ডালগোনা ক্যান্ডি হ্যাশট্যাগ (#dalgonacandy), সেটি দেখেছে ১০০ কোটির বেশি মানুষ।

নির্ধারিত সময় ফুরানোর আগেই সুই দিয়ে খোদাই করে আকৃতি আলাদা করতে হয়
নেটফ্লিক্স

অনেকে আবার স্মৃতিকাতর হয়ে তাঁদের মায়ের হাতের তৈরি ডালগোনা ক্যান্ডির রেসিপি দিচ্ছেন। কেউ বেছে নিচ্ছেন ফিউশনের পথ, বানিয়ে ফেলছেন নিজের মতো করে। সে খুদে ভিডিওগুলোও দেখছেন লাখো মানুষ।

শুটিংয়ের ফাঁকে
নেটফ্লিক্স

কেউ কেউ অবশ্য কেবল ক্যান্ডি বানিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না। ‘স্কুইড গেম’-এর মতো চ্যালেঞ্জে অংশ নিয়ে ক্যান্ডি থেকে আকৃতি আলাদা করার চেষ্টা করছেন। সে চ্যালেঞ্জে ব্যর্থতার অবশ্য ভয়ানক পরিণত থাকছে না। ব্যাপারটিকে মজা হিসেবেই নিচ্ছেন। ডালগোনা চ্যালেঞ্জ, ডালগোনা ক্যান্ডি চ্যালেঞ্জ এবং হানিকম্ব চ্যালেঞ্জে গেলে এই পোস্টগুলো দেখা যাবে।

ক্যান্ডিতে কোনো আকৃতি খোদাই করে বের করতে পারুক বা না পারুক, কিছু কিছু ব্যবহারকারীর ভিডিও তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে। ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী।

আর যাঁরা ক্যান্ডি বানানোর ঝক্কি নিতে চান না, তাঁদের জন্য টিকটকে টফি গেম নামে একটি সুবিধা আছে। ব্যবহারকারীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাথা নাড়িয়ে ক্যান্ডিতে আকৃতি তৈরি করতে বলা হয়। সঙ্গে বাজতে থাকে ‘স্কুইড গেম’-এর মিউজিক ট্র্যাক। ইফ্যাক্টটি এ পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি টিকটক ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।

নেটফ্লিক্সে ‘স্কুইড গেম’ মুক্তি দেওয়া হয় গত মাসে। অর্থাভাবে থাকা একদল মরিয়া মানুষ ছয়টি চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে রহস্যজনক স্থানে একত্র হয়। জয়ী হলে পুরস্কার হিসেবে মিলবে বড় অঙ্কের অর্থ। আর ব্যর্থতার শাস্তি মৃত্যু। সব কটি চ্যালেঞ্জই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রচলিত শিশুদের খেলানির্ভর।

‘স্কুইড গেম’-এর কারণে হঠাৎ করে ডালগোনা ক্যান্ডির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির ব্যাপারটি সিরিজের পরিচালক হোয়াং ডং-হিউকের নজর এড়ায়নি। দ্য কোরিয়া টাইমসের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আমাদের সিরিজটির ডালগোনা ক্রেজ তৈরি নিয়ে আমি প্রায়ই অন্যদের সঙ্গে মজা করে থাকি।’