হুয়াওয়ের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর

হুয়াওয়ে লোগো
ছবি: রয়টার্স

মার্কিন সরকার এই বছরের শুরুর দিকে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বাড়তি নিষেধাজ্ঞা যুক্ত করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞা গতকাল মঙ্গলবার কার্যকর শুরু হয়েছে।

হুয়াওয়ে যাতে স্মার্টফোন ও এর সঙ্গে যুক্ত কোনো যন্ত্রাংশ তৈরি করতে না পারে, এ জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনা বাণিজ্য নিয়ে দ্বন্দ্বে বরাবরই হুয়াওয়েকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে আসছেন ট্রাম্প।

গত বছর থেকে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে ফাইভ-জি সেবার কাজে হুয়াওয়েকে ‘নিষিদ্ধ’ও ঘোষণা করা হয়। অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে হুয়াওয়ে।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট অ্যান্ড্রয়েড সেন্ট্রাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হুয়াওয়ের ওপর ওয়াশিংটনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা গ্রাহকদের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

গত মে মাস থেকে হুয়াওয়ের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এতে মার্কিন প্রযুক্তির সাহায্যে যেসব প্রতিষ্ঠান চিপ তৈরি করে থাকে, তাদের হুয়াওয়ের কাছে চিপ বিক্রি বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়।

এর মধ্যে প্রভাব পড়ে চিপ নির্মাতা টিএসএমসির ওপর। তারা গতকাল থেকে আর হুয়াওয়ের কাছে চিপসেট বিক্রি করতে পারছে না। ইতিমধ্যে তারা নতুন ফরমাশ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

অ্যান্ড্রয়েড সেন্ট্রাল জানিয়েছে, মেট ৪০ সিরিজের স্মার্টফোনে নতুন কিরিন প্রসেসর যুক্ত করতে পারবে হুয়াওয়ে। এরপর অন্য যেসব স্মার্টফোন আসবে, তাতে কিরিন চিপসেট ব্যবহারের সুযোগ থাকছে না।

কিরিন চিপসেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অন্য কোনো উৎস থেকেও চিপসেট নিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। মিডিয়াটিকের যেসব চিপসেট নেওয়ার সম্ভাবনা ছিল, গতকাল থেকে তা-ও বন্ধ হয়ে গেছে।

গত মাসে মিডিয়াটিকের পক্ষ থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মানার ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে লাইসেন্সের আবেদন করেছে তারা।

হুয়াওয়ে কনজ্যুমার ব্যবসার প্রধান নির্বাহী রিচার্ড ইয়ু বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে তাঁরা আর কিরিন চিপসেট তৈরি করতে পারবেন না।

২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে হুয়াওয়েকে দেশটিতে কালো তালিকাভুক্ত করে সাময়িক সময়ের জন্য ব্যবসা করার লাইসেন্স দিয়ে আসছিল ট্রাম্প প্রশাসন। পরে ৯০ দিন করে বেশ কয়েকবার বাড়ানো হয়েছে সেই লাইসেন্সের মেয়াদ। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে সাময়িক লাইসেন্স পেলেও গত মে মাস থেকে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন।

এর আগে মাইক্রোসফট কেবল হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসা করার লাইসেন্স পেয়েছে। ফলে হুয়াওয়ের মেটবুকে উইন্ডোজ চলছে। এ পর্যন্ত গুগল ও কোয়ালকম ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পায়নি।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে বলে এলজি ও স্যামসাংয়ের কাছ থেকে ডিসপ্লেও পাচ্ছে না হুয়াওয়ে। গতকাল থেকে হুয়াওয়ের কাছে প্রিমিয়াম ডিসপ্লে সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হচ্ছে এলজি ও স্যামসাংকে।

হুয়াওয়ে সাধারণত এলজি, স্যামসাং ও চীনের বিওইর কাছ থেকে ডিসপ্লে নিয়ে থাকে। এলজি ও স্যামসাং পাশে না থাকায় আপাতত স্থানীয় ডিসপ্লে নির্মাতার ওপর ভরসা করতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে। চিপের ক্ষেত্রেও স্থানীয় চিপ নির্মাতা এসএমআইসির ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে হুয়াওয়েকে।