৩২০০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরায় ব্রকলির ছবি

তৈরি হয়ে গেলে রুবিন অবজারভেটরি দেখতে হবে এমন
ছবি: রুবিন অবজারভেটরি

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একদল বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী দিনরাত এক করে টেলিস্কোপের জন্য ক্যামেরা বানাচ্ছেন। ৩ হাজার ২০০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাটির এক ছবিতে রাতের আকাশের বিশাল অংশ ধারণ করা যাবে। তবে পরীক্ষার জন্য ক্যামেরাটি রাতের আকাশে নয়, তাক করা হয়েছিল এক ব্রকলির দিকে। সে ছবি গত মাসে প্রকাশ করেন বিজ্ঞানীরা।

ক্যামেরাটি তৈরি করা হচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কের এসএলএসি ন্যাশনাল অ্যাকসেলেরেটর ল্যাবরেটরিতে। তৈরি হয়ে গেলে সেটি চিলির সেরো পাচনের রুবিন অবজারভেটরিতে স্থাপন করা হবে। প্রয়াত জ্যোতির্বিদ ভেরা রুবিনের নামে নামকরণ করা হচ্ছে টেলিস্কোপটি।

প্রয়াত মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভেরা রুবিন। তাঁর নামেই চিলিতে তৈরি হচ্ছে রুবিন অবজারভেটরি
ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অপটিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমি অবজারভেটরি

ক্যামেরাটি তৈরি ও পরীক্ষার দায়িত্ব বিজ্ঞানী আরন রুডম্যানের। তিনি বলেন, ‘সামনের লেন্স থেকে পেছনের যন্ত্রাংশগুলো পর্যন্ত পুরো ক্যামেরাটি দৈর্ঘ্যে ১৩ ফুট, আর ব্যাস হলো ৫ ফুট—এতটাই বিশাল।’

ক্যামেরাটির ভেতরে লেন্স, ফিল্টার আর অন্যান্য যন্ত্রাংশের সঙ্গে আছে শীতল রাখার ব্যবস্থা। কারণ ক্যামেরাটি কর্মক্ষম রাখতে হলে তাপমাত্রা শূন্যের ১৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট নিচে রাখতে হয়। ক্যামেরাটি পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলে বেশ কিছু লেন্সের সাহায্যে মহাজাগতিক বস্তুগুলোতে ফোকাস ঠিক করা যাবে।

তবে প্রশ্ন হলো, ব্রকলির ছবি তোলা হলো কেন? রুডম্যানের উত্তর, ‘মজা করার জন্য। ভেবেছিলাম দেখতে ভালো লাগবে, লাগছেও। এর গঠনটা মজার।’

এই সেই ব্রকলির ছবি। হয়তো ভাবছেন, আপনার স্মার্টফোনে এর চেয়ে ঢের ভালো ছবি ওঠে। তা ঠিক। তবে ক্যামেরাটি রাতের আকাশের ছবি তোলার জন্য, ব্রকলির নয়

রুডম্যান আসলেই মজা পেয়েছিলেন কি না কে জানে, তবে ব্রকলির ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা বুঝেছিলেন যে তাঁরা ঠিক পথেই এগোচ্ছেন।

আগামী বছরের মধ্যে টেলিস্কোপটি স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবে তা কিছুটা পিছিয়েছে। এখন ২০২২ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।

তখন তাঁরা মজার সব মহাজাগতিক বস্তুর ছবি তুলতে পারবেন। আর মহাকাশের কোথাও কেউ যদি ব্রকলির চাষাবাদ শুরু করে, তো সেটাও হয়তো ক্যামেরায় উঠে আসবে।

রুবিন অবজারভেটরির জন্য তৈরি হচ্ছে ক্যামেরা