বাংলা | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

বীরশ্রেষ্ঠ

অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর লেখো।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। একসময় এ দেশ পাকিস্তানের একটি অংশ ছিল। তখন পাকিস্তানিরা আমাদের শাসন করেছে। তারা নানাভাবে এ দেশকে শোষণও করেছে। পাকিস্তানিদের শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। দেশকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করার জন্য শুরু হয়েছিল এই যুদ্ধ। তাই একে বলে মুক্তিযুদ্ধ। সেই যুদ্ধে যোগ দিলেন কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, জনতাসহ সর্বস্তরের অগণিত মানুষ। জীবন বাজি রেখে তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েন স্বাধীনতার সংগ্রামে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে যেভাবেই হোক পরাজিত করতে হবে। শত্রুমুক্ত করতে হবে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ অর্জন করবে স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর

বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হলো। এল আমাদের
চূড়ান্ত বিজয়। দেশকে শত্রুর কবল থেকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা যে সাহস ও বীরত্ব দেখিয়েছেন, তার তুলনা নেই। যুদ্ধ শেষে সেরা মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ হলো মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সবচেয়ে বড় উপাধি। মাত্র সাতজন বীর এই সম্মান লাভ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। তাঁদের আমরা ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি।

৩. প্রদত্ত শব্দের অর্থ বুঝে শূন্যস্থান পূরণ করো।

শব্দ শব্দার্থ

অহংকার— গর্ব

সর্বস্তরের— সব শ্রেণি ও পেশার

গৌরব— মর্যাদা

অগণিত— অসংখ্য

পরাজিত— পরাস্ত

ক. মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের —।

খ. নিজেকে বড় মনে করায় কোনো — নেই।

গ. মুক্তিযুদ্ধে দেশের — মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন।

ঘ. আকাশে আছে — তারা।

ঙ. মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ্য ছিল হানাদার বাহিনীকে — করতে হয়।

৪. অনুচ্ছেদ পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো।

ক. বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার পাঁচটি কারণ উল্লেখ করো।

খ. বাংলাদেশের মানুষ কেন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন? তা পাঁচটি বাক্যে লেখো।

গ. সাতজন বীরশ্রেষ্ঠর নাম লেখো।

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের অহংকার

খ. নিজেকে বড় মনে করায় কোনো গৌরব নেই।

গ. মুক্তিযুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন।

ঘ. আকাশে আছে অগণিত তারা।

ঙ. মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ্য ছিল হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করতে হবে।

৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক.

বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার পাঁচটি কারণ নিচে দেওয়া হলো:

দেশকে শোষকের হাত থেকে রক্ষা করা। দেশকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করা। হানাদার বাহিনীর অত্যাচার থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করা।

শাসক ও শোষকদের অন্যায়-অবিচার থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করা। দেশকে স্বাধীন ও শত্রুমুক্ত করা।

খ.

পাকিস্তান সরকার এ দেশের মানুষের ওপর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে যে নিপীড়ন চালিয়েছিল, তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর থেকেই পাকিস্তানি শাসকেরা এ দেশের মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালিরা তখন প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। এতে পাকিস্তানি শাসকেরা বাঙালিদের দমাতে চেষ্টা করেন। তারই জবাবে ১৯৭১ সালে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন।

গ.

মুক্তিযুদ্ধের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ হলেন—

১. ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর

২. ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান

৩. সিপাহি হামিদুর রহমান

৪. ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ

৫. সিপাহি মোস্তফা কামাল

৬. ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার রুহুল আমিন

৭. ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ।

বাকি অংশ ছাপা হবে আগামীকাল


খন্দকার আতিক, শিক্ষক
উইল্​স লিট্​ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা