>
৩০ মার্চ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফ্রেমে বসছে মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৭। প্রথম আয়োজনটি বসেছিল ১৯৯৯ সালের ১২ মার্চ। দেশের চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও সংগীতাঙ্গনের তারকাদের জন্য সবচেয়ে সম্মানজনক এই পুরস্কারের ২০তম আসর বসছে এবার। তার আগে একবার পেছন ফিরে দেখে নিই। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শফিক আল মামুন
আজীবন সম্মাননা
২০০২ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে আজীবন সম্মাননা। ওই বছর এই সন্মাননা পেয়েছিলেন নজরুলসংগীতের শিল্পী সোহরাব হোসেন। আর ২০১৭ সালে দেওয়া হয়েছে সৈয়দ হাসান ইমামকে। মাঝের বছরগুলোতে যথাক্রমে এই সন্মাননা পেয়েছেন সুভাষ দত্ত, আবদুল লতিফ, শাহ আবদুল করিম, ফেরদৌসী মজুমদার, কলিম শরাফী, ফেরদৌসী রহমান, বেবী ইসলাম, সুধীন দাশ, ফিরোজা বেগম, মুস্তাফা মনোয়ার, রামকানাই দাশ, রাজ্জাক, ফাহমিদা খাতুন এবং কবরী।
তারকা জরিপ
প্রথম আয়োজন থেকেই চলছে তারকা জরিপ পুরস্কার। পাঠকের ভোটেই সেরা নির্বাচিত হন টিভি, চলচ্চিত্র ও সংগীত বিভাগের তারকারা।
গান
জনপ্রিয় বিভাগে এ পর্যন্ত ছয়বার আসিফ আকবর সেরা গায়কের পুরস্কার জিতেছেন। তাঁর পরের অবস্থানেই আছেন হাবিব ওয়াহিদ। তিনি পেয়েছেন পাঁচবার। তবে সংগীত বিভাগের সবচাইতে বেশি, সাতবার এই পুরস্কার পেয়েছেন ন্যান্সি। চারবার পেয়েছেন কনক চাঁপা। এ ছাড়া একবার করে পুরস্কার পেয়েছেন মমতাজ, ডলি সায়ন্তনী, ফাহমিদা নবী ও কণা।
নাটক
টেলিভিশন নাটকে জনপ্রিয় বিভাগে সেরা অভিনেতা হিসেবে আটবার পুরস্কার পেয়েছেন জাহিদ হাসান। পেয়েছেন ছয়বার মোশাররফ করিম। পাঁচবার পেয়েছেন অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ।
একই বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর রেকর্ড নুসরাত ইমরোজ তিশার। ছয়বার ঘরে তুলেছেন এই পুরস্কার। তিনবার এই পুরস্কার জিতেছেন অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত। এ ছাড়া এক ও একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন শমী কায়সার, অপি করিম, শ্রাবন্তী, তারিন, সুমাইয়া শিমু, জয়া আহসানের ঘরেও গেছে এই বিভাগের পুরস্কার।
চলচ্চিত্র
সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে সাতবার পুরস্কার পেয়েছেন শাকিব খান। ২০১৫ সালের পুরস্কারটা শাকিবের ঘরে গেলে টানা আটবারের রেকর্ড হতে পারত তাঁর। কিন্তু ওই বছরের সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন আরিফিন শুভ। পাঁচবার পেয়েছেন রিয়াজ। প্রয়াত নায়ক মান্না এবং জনপ্রিয় অভিনেতা ফেরদৌসের ঘরেও আছে এই পুরস্কার। তরুণ অভিনেতাদের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে ২০০৫ সালে মোল্লাবাড়ির বউ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন এ টি এম শামসুজ্জামান।
এদিকে রেকর্ডের দিক থেকে সবার ওপরের তালিকায় আছেন অভিনেত্রী শাবনূর। তিনি ১০ বার পেয়েছেন সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার। ১৯৯৮ সালে মেরিল-প্রথম আলোর পুরস্কার দেওয়ার পর থেকে শুরুতেই হ্যাটট্রিক করেছেন এই অভিনেত্রী। অন্যদিকে দুবার করে এই বিভাগের পুরস্কার পেয়েছেন মৌসুমী, পূর্ণিমা ও জয়া আহসান। আর একবার করে পেয়েছেন কুসুম শিকদার, মাহি, জাকিয়া বারী মম ও নাবিলা।
নবীন অভিনয়শিল্পী
দর্শকের ভোটে বছরের সেরা নবীন অভিনয়শিল্পী পুরস্কার প্রবর্তন করা হয় ২০১৪ সাল থেকে। ওই বছর ইউটার্ন নাটকের জন্য পুরস্কার জেতেন তানজিন তিশা। পরের দুই বছর সেরা অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পেয়েছেন চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পীদ্বয়। একজন নুসরাত ফারিয়া (আশিকি) ও বুবলী (বসগিরি)।
সমালোচক পুরস্কার
সম্মানিত জুরিবোর্ডের বিবেচনায় সেরা কাজের জন্য সমালোচক পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ২০০০ সাল থেকে। ওই বছরই সেরা চিত্রনাট্যকার হিসেবে পুরস্কার পান মাসুম রেজা। নির্দেশক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। আর অভিনেত্রী হিসেবে তারানা হালিম ও অভিনেতা মাসুম আজিজ। তারপর থেকে প্রতিবছরই এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
এই বিভাগে সেরা অভিনেতা হিসেবে তিনবার পুরস্কার পেয়েছেন মোশাররফ করিম। দুবার করে এই পুরস্কার পেয়ে মোশাররফ করিমের পরেই আছেন ফজলুর রহমান বাবু ও শহীদুজ্জামান সেলিম।
সেরা অভিনেত্রী হিসেবে দুবার পুরস্কার পেয়েছেন অপি করিম ও তিশা। চারবার সেরা টিভি নাট্যনির্দেশকের পুরস্কার পেয়েছেন অনিমেষ আইচ। তিনবার পেয়েছেন নূরুল আলম আতিক। সেরা চিত্রনাট্যকার হিসেবে তিনবার পুরস্কার পেয়েছেন নূরুল আলম আতিক।
২০০০ সাল থেকে শুধু টেলিভিশন নাটকে সমালোচক পুরস্কার দেওয়া শুরু হলেও ২০০৩ সাল থেকে সেরা চলচ্চিত্রের সমালোচক পুরস্কার। ওই বছরই প্রথম পুরস্কার পেয়েছিল সাইদুল আনাম টুটুলের আধিয়ার চলচ্চিত্রটি। আর সবশেষ, অর্থাৎ ২০১৬ সালের সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে তৌকীর আহমেদের অজ্ঞাতনামা চলচ্চিত্রটি। সমালোচক পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রীর ক্যাটাগরিতে কোনো অভিনেত্রী একাধিকবার পুরস্কার পাননি। ২০০৩ সালে চন্দ্রকথা চলচ্চিত্রের জন্য এই বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলেন শাওন। একই সিনেমার জন্য সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন ফেরদৌস। আর ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া আয়নাবাজি চলচ্চিত্রের জন্য সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। এর আগেও এই অভিনেতা একই বিভাগে আরও দুবার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
উপস্থাপনা
১৯৯৯ সালে প্রথমবার আয়োজিত মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের উপস্থাপনা করেছিলেন আফজাল হোসেন ও সুবর্ণা মুস্তাফা। পরের বছর করেছেন জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেত। আরও চারবার উপস্থাপনা করেছেন তিনি। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করেছেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। এ ছাড়া আবুল হায়াত, জুয়েল আইচ, ফেরদৌস, রিয়াজ, জাহিদ হাসান, চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, অপি করিম, সাজু খাদেম, তিশা, জান্নাতুল পিয়াও উপস্থাপনা করেছেন এই অনুষ্ঠানের। তবে ২০১৭ সালে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের মঞ্চে ফেরদৌস ও পূর্ণিমার উপস্থাপনা প্রশংসিত ও নন্দিত হয়েছিল।