রবীন্দ্রনাথের গানে গানে বর্ষামঙ্গল

ছায়ানট মিলনায়তনে ‘গান না-গাওয়ার দল’ আয়োজিত বর্ষামঙ্গল অনুষ্ঠানে শিল্পীদের সমবেত পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো
ছায়ানট মিলনায়তনে ‘গান না-গাওয়ার দল’ আয়োজিত বর্ষামঙ্গল অনুষ্ঠানে শিল্পীদের সমবেত পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো

বর্ষা এখন নগরজীবনের নিত্যসঙ্গী। ঘোর বর্ষা দেখলেই নগরবাসী আতঙ্ক বোধ করেন। তার পরও গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনভর্তি দর্শকদের মনে হয়েছে, বাইরে ঝুমবৃষ্টি হলেই মনে হয় ভালো হতো। মিলনায়তনের ভেতরে তখন একদল শিল্পী রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতায় বর্ষামঙ্গলে ব্যস্ত।

বর্ষামঙ্গলের এই গান-কবিতার আসরের আয়োজন করে ‘না-গান গাওয়ার দল’। মিলনায়তনের ভেতরে আলো-আঁধারির অপার্থিব একটা জগৎ, বাইরের সঙ্গে যার কোনো যোগ নেই। তবে আসনস্বল্পতার কারণে অনেক দর্শকই মিলনায়তনের ভেতরে ঢুকতে পারেননি।

সম্মিলিত কণ্ঠে ‘বিশ্ববীণারবে বিশ্বজন মোহিছে’ ও ‘নমো, নমো, নমো করুণাঘন, নমো হে’ দিয়ে শুরু হয় বর্ষামঙ্গল। তারপর একে একে সুর আছড়ে পড়ে মিলনায়তনের প্রতিটি কোণে। কখনো কৃষ্ণকলির রূপের বর্ণনা, কখনো মেঘের সঙ্গী হতে মনের আকুতি কিংবা ঘন গৌরবে নবযৌবনা বরষা, শ্যাম গম্ভীর সরসায় বর্ষার আগমনী গান। সঙ্গে ছিল ছিন্নপত্রাবলী, লিপিকা থেকে পাঠ।

একে একে পরিবেশিত হলো ‘এসো শ্যামল সুন্দর’, ‘যায় দিন, শ্রাবণদিন যায়’, ‘আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে’, ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’, ‘বাদলদিনের প্রথম কদমফুল’ ইত্যাদি গান—কখনো সম্মিলিত কণ্ঠে, কখনো একক বা দ্বৈত কণ্ঠে।

দর্শকদের মুগ্ধ করে রাখা ‘না-গান গাওয়ার দল’-এর সদস্যদের মধ্যে ছিলেন অভিজিত দাস, সেঁজুতি বড়ুয়া, সোমা চৌধুরী, অভিজিৎ মজুমদার, আইরিন পারভীন, তানিমা ইসলাম, তারেক হাসান, প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য, সুকান্ত চক্রবর্তী, সুশান্ত রায় প্রমুখ।

গান-কবিতায় কখন যে দুই ঘণ্টার অধিক সময় কেটে গেছে, তা টের পাওয়া যায়নি। ‘পাগলা হাওয়ার বাদলদিনে’ আর ‘তৃষ্ণার শান্তি সুন্দরকান্তি’র সুরে অনুষ্ঠান শেষ হলেও তার রেশ রয়ে যায় শ্রোতার মনে।

বর্ষার আবির্ভাব যেন সমাজজীবনে মঙ্গলময় হয়, সেই কামনায় বহুকাল আগে থেকেই বাংলার বুকে উদ্‌যাপিত হয় বর্ষামঙ্গলের উৎসব। আয়োজকেরা জানান, ‘না-গান গাওয়ার দল’ বর্ষামঙ্গলের এই উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। ঢাকার উৎসবটি ছিল শুক্রবার। চট্টগ্রামে থিয়েটার ইনস্টিটিউটে হবে ১৪ আগস্ট।