স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেলেন যাঁরা

সোমবার স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র উভয় ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ১১টি বিভাগে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়

করোনা মহামারির সংকটের মধ্যেও অনলাইনে নিয়মিত উৎসব ও প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। ‘তৃতীয় বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২১’ এ বছরের আয়োজনগুলোর অন্যতম। দেশীয় চলচ্চিত্রের বিকাশ ও উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু ও নির্মল চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শনীর গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তৃতীয়বারের মতো উৎসবটি আয়োজন করেছে। সোমবার স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র উভয় ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ১১টি বিভাগে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হয়েছে সারা বিনতে আফজল নির্মিত ‘আশ্রয়’, ‘শব্দের ভেতর ঘর’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নির্মাতা হয়েছেন ফুয়াদুজ্জামান ফুয়াদ; বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছে মেহেদী হাসান নির্মিত ‘দ্য ক্রিমেশন’ ও অপরাজিতা সংগীতা নির্মিত ‘রিভোল্ট’।

স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র উভয় ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ১১টি বিভাগে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়

প্রামাণ্যচিত্রে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা এই দুই বিভাগেই পুরস্কার পেয়েছে মো. রাসেল রানা নির্মিত ‘হাউসের ধুয়া’, বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছে ফরিদ আহমদ নির্মিত ‘আনতারা’। অন্যান্য ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণের জন্য ফুয়াদুজ্জামান নির্মিত ‘শব্দের ভেতর ঘর’, শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা ও শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা দুই বিভাগে মো. রাসেল রানা নির্মিত ‘হাউসের ধুয়া’, শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা মেহেদী হাসান নির্মিত ‘দ্য ক্রিমেশন’ পুরস্কার পেয়েছে।

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ১ লাখ ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা ১ লাখ এবং বিশেষ জুরি পুরস্কার ৫০ হাজার, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা ২৫ হাজার, শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনায় ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।

জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে উৎসবের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

সোমবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে উৎসবের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর, চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী, নির্মাতা সাজ্জাদ জহির, জাহিদুর রহিম অঞ্জন প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক আফসানা করিম।

সারা দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে প্রায় ৪০০টি চলচ্চিত্র থেকে উৎসব উপলক্ষে গঠিত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বাছাই কমিটি ১১৯টি চলচ্চিত্র (৮১টি কাহিনি চলচ্চিত্র ও ৩৮টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র) উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য বাছাই করেন। উৎসবের চলচ্চিত্র সিলেকশন কমিটিতে ছিলেন চলচ্চিত্র গবেষক অনুপম হায়াৎ, নির্মাতা সাজ্জাদ জহির, চিত্রগ্রাহক রাকিবুল হাসান, চলচ্চিত্র সমালোচক ও চিত্রনাট্যকার সাদিয়া খালিদ এবং শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহকারী পরিচালক চাকলাদার মোস্তাফা আল মাস্উদ।

জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে উৎসবের পুরস্কার বিতরণ করা হয়

নির্মাতা সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকীকে চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি জুরি কমিটি চলচ্চিত্রগুলোর ভেতর থেকে পুরস্কারের জন্য চূড়ান্ত করেছেন। কমিটির অন্যান্য সদস্য হলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক ফরিদুর রহমান, জাহিদুর রহমান অঞ্জন, অমিভাত রেজা চৌধুরী এবং কমিটির সদস্যসচিব একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক আফসানা করিম।
সোমবার পুরস্কার বিতরণ শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় নৃত্য পরিচালক জয়দ্বীপ পালিতের পরিচালনায় ‘বিপুলও তরঙ্গ রে’ এবং নৃত্য পরিচালক ফিফা চাকমার পরিচালনায় ‘আজ কেন মোর প্রাণ সজনী গো’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির নৃতদল। একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক শিল্পীদের পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।