>
নায়করাজ রাজ্জাক ও চিত্রনায়িকা কবরী।
নায়করাজ রাজ্জাক ও চিত্রনায়িকা কবরী।
নায়করাজ রাজ্জাকের প্রসঙ্গ এলেই, তাঁর নাম মাথায় আসবে। বাংলা চলচ্চিত্রের সেই মিষ্টি মেয়ে চিত্রনায়িকা কবরী। বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বকালের সেরা জুটি ভাবা হয় তাঁদের। রাজ্জাককে নিয়ে কবরীর স্মৃতিচারণা—

দিন, তারিখ, মাস, বছর—কোনোটাই মনে নেই। শুধু মনে আছে, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘যোগাযোগ’ ছবির মাধ্যমে রাজ্জাকের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, শেষ পর্যন্ত ছবিটি আর তৈরি হয়নি। এই ছবির জন্য কথা বলতে গিয়ে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সঙ্গেও পরিচয় হয়। এরপর তাঁর বাসায় রাজ্জাক সাহেবের সঙ্গে অনেক গল্প হয়। একটা পরিকল্পনাও হয়। তখনো আমি তাঁর সঙ্গে কোনো ছবিতে অভিনয় করিনি। তবে ‘যোগাযোগ’ ছবি নিয়ে আলাপ করতে করতে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও তৈরি হয়ে যায়। ‘ময়নামতি’ ছবির পর আমাদের নিয়ে চারদিকে হইচই শুরু হয়ে যায়। এর আগে ও পরে অনেক ছবিতে কাজ করি। ছবিগুলো করতে গিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক মিষ্টি মুহূর্ত পেয়েছি। রয়েছে অসংখ্য গল্পও। সে সময় আমার বয়সও অনেক কম ছিল। গল্প আর আড্ডায় আমাদের মধ্যে নিটোল বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তখনকার সময়েও আমাদের বন্ধুত্বকে সাধারণ মানুষ বাঁকা চোখে দেখত। কিন্তু এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চলচ্চিত্রের লোকেরা খুব উপভোগ করত। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, রাজ্জাক ও কবরীর মধ্যে অদৃশ্য কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা শুধুই বন্ধু। আমাদের জুটি তৈরি হয়েছে বাস্তবতার নিরিখে। আমাদের খুনসুটি হতো। এ নিয়ে মান-অভিমানেরও শেষ ছিল না। কোনো ছবির শুটিংয়ে আবার মান-অভিমানের দৃশ্যগুলোতে অভিনয়ের ক্ষেত্রে মনে হতো না, অভিনয় করছি। মনেই হতো, বাস্তবতার নিরিখে আমরা মান-অভিমানের ব্যাপারগুলো তুলে ধরছি। নিটোল বন্ধুত্বের কারণেই তা সম্ভব হয়েছে। একটা সময় তো তাঁর পরিবারের সঙ্গেও আমার দারুণ একটা বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রাজ্জাক সাহেবের স্ত্রী লক্ষ্মীও আমাদের বন্ধুত্ব সম্পর্কে ভালোই জানতেন। তাই এ নিয়ে তিনি কিছুই মনে করতেন না। তাঁর বাচ্চারাও আমাদের বাসায় আসা-যাওয়া করত।
* নায়করাজের গত জন্মদিনে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে