চলে গেলেন মিজু আহমেদ

 বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট অভিনেতা মিজু আহমেদ আর নেই। আজ সোমবার ঢাকা থেকে দিনাজপুর যাওয়ার পথে ট্রেনে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে মিজু আহমেদকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

জানা যায়, একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য ট্রেনযোগে দিনাজপুর যাওয়ার উদ্দেশে আজ সোমবার সন্ধ্যার পর বিমানবন্দর স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন মিজু আহমেদ। রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে হঠাৎ তিনি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। এ সময় ট্রেনে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাঁর হার্টবিট পাননি। পরে তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে মিজু আহমেদকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন ।

মিজু আহমেদ মূলত খল অভিনেতা হিসেবে বাংলা চলচ্চিত্রে বেশি পরিচিত। তবে একজন প্রযোজক হিসেবেও ঢালিউড পাড়ায় পরিচিত রয়েছে তাঁর।

মিজু আহমেদ ১৭ নভেম্বর ১৯৫৩ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আসল নাম মিজানুর রহমান। শৈশব থেকে তিনি থিয়েটারের প্রতি খুবই আগ্রহী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি কুষ্টিয়ার স্থানীয় একটি নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হন।

১৯৭৮ সালে ‘তৃষ্ণা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। কয়েক বছর পরে তিনি ঢালিউড চলচ্চিত্রশিল্পে অন্যতম সেরা একজন খলনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। বড় পর্দায় এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০টি ছবি মুক্তি পেয়েছে তাঁর। তাঁর অভিনীত ছবিগুলো মধ্যে হচ্ছে ‘তৃষ্ণা’ (১৯৭৮), ‘মহানগর’ (১৯৮১), ‘স্যারেন্ডার’ (১৯৮৭), ‘চাকর’ (১৯৯২), ‘সোলেমান ডাঙ্গা’ (১৯৯২), ‘ত্যাগ’ (১৯৯৩), ‘বশিরা’ (১৯৯৬), ‘আজকের সন্ত্রাসী’ (১৯৯৬), ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’ (১৯৯৭), ‘কুলি’ (১৯৯৭), ‘লাঠি’ (১৯৯৯), ‘লাল বাদশা’ (১৯৯৯), ‘গুন্ডা নাম্বার ওয়ান’ (২০০০), ‘ঝড়’ (২০০০), ‘কষ্ট’ (২০০০), ‘ওদের ধর’ (২০০২), ‘ইতিহাস’ (২০০২), ‘ভাইয়া’ (২০০২), ‘হিংসা প্রতিহিংসা’ (২০০৩), ‘বিগ বস’ (২০০৩), ‘আজকের সমাজ’ (২০০৪), ‘মহিলা হোস্টেল’ (২০০৪), ‘ভণ্ড ওঝা’ (২০০৬) ইত্যাদি।

‘তৃষ্ণা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ১৯৯২ সালে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান মিজু আহমেদ।