বাঁশি ও ধ্রুপদে 'প্রাণের খেলা'

হারমোনিয়াম থেকে হাত সরিয়ে তানপুরাটা নিলেন অসিত রায়। নিজ হাতে সেটা নিরীক্ষা করে ফিরিয়ে দিলেন পাশে বসা শিক্ষার্থী জ্ঞানসংকর পালের হাতে। ছায়ানটে গান শোনাবে বলে টাঙ্গাইল থেকে এসেছে এই ধ্রুপদ গুরুর কয়েকজন শিক্ষার্থী। গুরু এসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে ছিল ‘প্রাণের খেলা’র ৫১তম আসর। নিয়মিত এ আয়োজনটি করে আসছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। শুরুতে টাঙ্গাইলের সংগঠন ষড়জ-পঞ্চম-এর ছয় শিক্ষার্থী ছোট আলাপে সমবেত কণ্ঠে সুর ফাঁকতালে মালকোষ রাগে পরিবেশন করে ধ্রুপদ। পরপর ত্রিতালে ইমন রাগে খেয়াল এবং তারানা গেয়ে শোনায় তারা। শেষ পরিবেশনা ছিল গুরু অসিত রায়ের। শংকরা রাগে প্রথমে আলাপ, জোড় এবং ঝালা পরিবেশন করেন তিনি। পরে ধামার এবং সুর ফাঁকতালে গেয়ে শোনান একটি বন্দিশ। তাঁর সঙ্গে এসেছে দেবাঞ্জনা দেব, জয়িতা পণ্ডিত, দেবার্পণ বসাক, শ্রেয়সী চক্রবর্তী, প্রাচী চাকী ও অর্পিতা রায়।
এ আসরে উচ্চাঙ্গসংগীত ছাড়াও ছিল বাঁশি। দ্বিতীয়ার্ধে বাঁশি বাজিয়ে শোনান গুরু মর্তুজা কবীর মুরাদ ও তাঁর সংগঠন ‘আরোহ’-এর বারো শিক্ষার্থী। গুরু-শিষ্যের এ দলটি ত্রিতালে রাগ হংসধ্বনি বাজিয়ে শোনান। পাহাড়ি ধুন বাজিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন মর্তুজা কবীর মুরাদ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। আসরের শুরুতে শিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে ‘প্রাণের খেলা’ নামের এই আসর নিয়েও দুটি কথা বলেন তিনি।
কাজী আরিফকে শ্রদ্ধা
সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের আঙিনায় গতকাল সন্ধ্যায় সুকুমার রায়ের ‘আবোলতাবোল’ কবিতা ‘আয়রে ভোলা খেয়াল খোলা’ বৃন্দ আবৃত্তি করল মুক্তকণ্ঠের সদস্যরা। কাজী আরিফ এই কবিতাটি বৃন্দ আবৃত্তি হিসেবে প্রথম শিখিয়েছিলেন দলের সদস্যদের। আজ যখন এটি আবৃত্তি হলো, তখন আর তিনি নেই।
তাঁকে নিয়ে মুক্তকণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমি আয়োজন করে স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানের।
সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘তাঁর উদ্ভাবনী প্রতিভা ছিল অসাধারণ। দর্শনীর বিনিময়ে আবৃত্তি থেকে শুরু করে চৈত্রসংক্রান্তি, আরও অনেক কিছুর শুরু করেছিলেন আরিফ।’ এরপর তিনি কাজী আরিফকে নিবেদন করে একটি রবীন্দ্রসংগীত গান।
কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, আবৃত্তিকে তিনি অন্তর থেকে গ্রহণ করেছিলেন।
বক্তব্য দেন আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম, নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, আবৃত্তিশিল্পী মাসুম আজিজুল বাশার ও মেহেদি হাসান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাজী আরিফের সন্তানেরা। কাজী আরিফকে নিবেদন করে আবৃত্তি করেন মুক্তকণ্ঠের সদস্যরা। মুক্তকণ্ঠের পথচলা নিয়ে কথা বলেন শিল্পী আহসান। সঞ্চালনা করেন আঞ্জুমান আরা।
জুয়েলের ‘এমন হলো কই’
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে মোড়ক খোলা হলো শিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের এমন হলো কই অ্যালবামের। এটি তাঁর দশম একক অ্যালবাম।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সংগীতজীবনের অনেক স্মৃতিকথা তুলে ধরেন এই শিল্পী। কণ্ঠে আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘একসময় নিজেদের পরিশ্রমের টাকায় শ্রোতারা আমাদের অ্যালবাম কিনতেন। এখন তেমনটা হয় না। এই সময়ের শ্রোতারা কীভাবে গান শুনবেন, সেটা প্রযোজকদের ভাবা দরকার ছিল।’
একটি রবীন্দ্রসংগীতসহ এমন হলো কই-এ গান রয়েছে পাঁচটি। এগুলো লিখেছেন শাহান কবন্ধ, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন বাপ্পা মজুমদার। অ্যালবামটি প্রকাশ করেছে বী ইমজ্ ওয়ার্কস্টেশন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফুয়াদ নাসের বাবু, লাবু রহমান, পার্থ মজুমদার, বাপ্পা মজুমদার প্রমুখ।