দুই মহীয়সী নারীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

কবি সুফিয়া কামাল ও শহীদজননী জাহানারা ইমাম স্মরণে গতকাল আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে শিল্পীদের সমবেত সংগীত পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো
কবি সুফিয়া কামাল ও শহীদজননী জাহানারা ইমাম স্মরণে গতকাল আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে শিল্পীদের সমবেত সংগীত পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো

সেগুনবাগিচার ভাড়া বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হয়েছিল প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি। তার মধ্যেই উদ্বোধন করা হয়। ট্রাস্টিরা ভিজে একাকার। সেদিন ভেজা কাপড়ে তাঁরা সুফিয়া কামালের কাছে গিয়েছিলেন আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য। আটজন মানুষ মিলে যখন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নিয়ে পরিকল্পনা হয়, তখন তাঁদের প্রেরণার উৎস ছিলেন দুই মহীয়সী নারী—সুফিয়া কামাল ও জাহানারা ইমাম।

এই স্মৃতিচারণাটি জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলীর। গতকাল বুধবার সকালে নিজস্ব মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এই দুই নারীকে জানাল শ্রদ্ধাঞ্জলি। ২০ জুন ছিল সুফিয়া কামালের জন্মদিন এবং ২৬ জুন জাহানারা ইমামের মৃত্যুদিবস। তাই শ্রদ্ধাঞ্জলির জন্য এই মাসকেই নির্ধারণ করেছেন তাঁরা।

স্মৃতিচারণা করে সৈয়দ হাসান ইমাম বললেন, ‘বেগম রোকেয়ার পরে দুই বাংলা মিলিয়ে এ রকম দুজন সমাজ পরিবর্তনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ নারী আমরা আর পাইনি। সমগ্র বাঙালি সমাজের মধ্যে এঁরা উল্লেখযোগ্য দুটি নাম।’

সুফিয়া কামালের সাহসী পদক্ষেপের উদাহরণ দিয়ে হাসান ইমাম আরও বলেন, একবার আইয়ুব খান অনেককে ডেকেছিলেন। সেখানে কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে বাঙালিদের পশু বলেছিলেন। তখন সুফিয়া কামাল উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা যদি পশু হই, আপনি তো আমাদের রাজা। আপনি পশুরাজ। আপনি সবচেয়ে বড় পশু।’ এই কথাটি বলার সাহস দুই পাকিস্তানে একজন মানুষেরও ছিল না।

শহীদজননী জাহানারা ইমামের স্মৃতিচারণায় হাসান ইমাম বলেন, ‘জাহানারা আপা শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যে সময়ে ঢাকায় রিকশায় কাপড় পেঁচিয়ে নারীরা চলাচল করত, সে সময়ে তিনি ববকাট চুল রাখতেন। নিজে গাড়ি চালাতেন। তাঁকে সেই সময় লোকেরা সুচিত্রা সেন বলত।’ তাঁর ক্যানসার হওয়া সত্ত্বেও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কাজগুলোতে সশরীরে অংশগ্রহণ করেছিলেন।