৩৩ বছরের নীরবতা ভাঙলেন অমিতাভ-রেখা!

রেখা-অমিতাভ
রেখা-অমিতাভ

দীর্ঘ ৩৩ বছরের শীতল যুদ্ধ আর নীরবতার অবসান ঘটালেন বলিউডের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় তারকা জুটি অমিতাভ বচ্চন ও রেখা। সম্প্রতি জনসমক্ষে রেখার সঙ্গে উষ্ণ কুশলবিনিময় করেছেন অমিতাভ। রেখার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেছেন অমিতাভের স্ত্রী জয়া বচ্চনও।

সত্তরের দশকে একাধিক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে সফল তারকা জুটি হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেন অমিতাভ-রেখা। পর্দার পাশাপাশি বাস্তব জীবনেও তাঁদের প্রেমের খবর চাউর হলে হইচই পড়ে যায় বলিউডে। বিবাহিত অমিতাভের সঙ্গে রেখার রহস্যময় প্রেমের খবর নিয়ে তোলপাড় ওঠে বলিউডকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। ১৯৮১ সালে মুক্তি পায় অমিতাভ, রেখা ও জয়া অভিনীত ত্রিভুজ প্রেমের ছবি ‘সিলসিলা’।

‘সিলসিলা’র পর আর কোনো ছবিতেই অমিতাভ-রেখা জুটিকে দেখা যায়নি। গত বছর আনিস বাজমির ‘ওয়েলকাম ব্যাক’ ছবিতে অমিতাভের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে রাজি হয়েছিলেন রেখা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ছবিটি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন ৫৯ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী।

কেবল পেশাগত জীবনেই নয়, ব্যক্তিজীবনেও বিশাল দূরত্ব তৈরি করেছিলেন অমিতাভ-রেখা। এমনকি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হলেও বরাবরই একে অন্যকে এড়িয়ে চলেছেন তাঁরা। অবশেষে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর সম্প্রতি স্ক্রিন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অতীতের দ্বন্দ্ব মেটালেন অমিতাভ-রেখা। এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে এনডিটিভি।

বেশ আকস্মিকভাবেই অভূতপূর্ব এ ঘটনা ঘটে যায়। ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে আয়োজিত স্ক্রিন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন অমিতাভ, জয়া ও রেখা। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে হঠাত্ করেই মঞ্চের সামনে রেখার আসনের কাছে এগিয়ে যান অমিতাভ। মিষ্টি হেসে রেখাকে নমস্কার জানিয়ে কুশল বিনিময় করেন ৭১ বছর বয়সী প্রভাবশালী এ তারকা অভিনেতা।

ঘটনার এখানেই শেষ নয়। রেখার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেছেন জয়া বচ্চনও। করমর্দন করার সময় ক্যামেরাবন্দীও হয়েছেন রেখা ও জয়া। দুজনই চমত্কার সিল্কের শাড়ি পরে অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন। হীরা ও সোনাখচিত ভারী গয়নাও পরেছিলেন এ দুজন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দো আনজানে’ ছবিতে প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধে অভিনয় করেন অমিতাভ বচ্চন ও রেখা। প্রচলিত আছে, একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে রেখার প্রেমে পড়ে যান বিবাহিত অমিতাভ এবং দিন দিন তাঁদের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। রেখার সঙ্গে প্রেমের খবর চাউর হওয়ার তিন বছর আগে বলিউডের আরেক অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়িকে বিয়ে করেছিলেন অমিতাভ।

শরীরের মেদ ঝরিয়ে ‘দো আনজানে’ ছবির মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুনরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন রেখা। ছবিটিতে প্রথমবারের মতো রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি বাস্তব জীবনেও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অমিতাভ ও রেখা। পরের বছর মুক্তি পায় এই জুটির ‘আলাপ’ ছবিটি। প্রচলিত আছে, ছবিটির শুটিংয়ের ফাঁকে রেখার এক বন্ধুর বাংলোতে সময় কাটাতেন তাঁরা।

১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘গঙ্গা কি সুগন্ধ’ ছবির শুটিং চলাকালে ছবির দলের এক সদস্যের সঙ্গে হাতাহাতি হয় অমিতাভের। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, রেখার কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করায় ছবির দলের ওই সদস্যের গায়ে হাত তুলেছিলেন সে সময়ের ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ অমিতাভ।

১৯৮০ সালে অমিতাভ-রেখা অভিনীত ‘রাম বলরাম’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর তাঁদের প্রেম নিয়ে অহরহ নানা কাহিনি ডালপালা মেলতে থাকে। এমন খবরও রটেছিল, সে সময় নাকি মাঝেমধ্যেই ছবির সেট থেকে উধাও হয়ে যেতেন তাঁরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেখাকে জয়া বচ্চন সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনো অবস্থাতেই স্বামীকে ছেড়ে যাবেন না তিনি।

১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সিলসিলা’ ছবিতে অমিতাভ-রেখার রসায়ন দেখে বিমোহিত হয়ে যান দর্শকরা। কিন্তু এরপর আর কখনোই একসঙ্গে পর্দায় হাজির হননি অমিতাভ-রেখা।