সঞ্জয়ের মুক্তির মেয়াদ আরও ১ মাস বাড়ল

সঞ্জয় দত্ত
সঞ্জয় দত্ত

স্ত্রী মান্যতা দত্তের অসুস্থতার কারণে এক মাসের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন অস্ত্র মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বলিউডের অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। গতকাল সোমবার তাঁর প্যারোলে মুক্তির মেয়াদ আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরও এক মাস কারাগারের বাইরে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন বলিউডের প্রভাবশালী এ তারকা অভিনেতা।
পুনের ইয়েরাওয়াড়া কারাগার থেকে গত ২১ ডিসেম্বর প্যারোলে মুক্তি পান সঞ্জয়। প্যারোলের মেয়াদ শেষ করে আজ ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু স্ত্রী মান্যতা দত্তের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণ দেখিয়ে দিন কয়েক আগে প্যারোলে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছিলেন সঞ্জয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার সঞ্জয়কে আরও এক মাস প্যারোলে মুক্ত থাকার অনুমতি দিয়েছেন পুনের বিভাগীয় কমিশনার। জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ।
স্ত্রীর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলে গত ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে সঞ্জয়কে এক মাসের জন্য প্যারোলে মুক্তির অনুমতি দিয়েছিলেন পুনের বিভাগীয় কমিশনার প্রভাকর দেশমুখ। কিন্তু ৫ ডিসেম্বর একটি চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীতে মান্যতাকে দেখা যাওয়ার পর তাঁর অসুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রভাবশালী তারকা হিসেবে সঞ্জয় বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন—এমন বিতর্ক ওঠে। সঞ্জয়ের প্যারোলে মুক্তির বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়। এতে করে সঞ্জয়ের প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। মান্যতার অসুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর গত ২১ ডিসেম্বর শর্তসাপেক্ষ সঞ্জয়কে প্যারোলে মুক্তি দেয় ইয়েরাওয়াড়া কারা কর্তৃপক্ষ। মুক্তির শর্ত হিসেবে বলা হয়, এক মাস সময়ের মধ্যে মুম্বাইয়ের খার থানায় সপ্তাহে দুই দিন হাজিরা দিতে হবে সঞ্জয়কে।

মান্যতার যকৃতে বড় আকারের একটি টিউমার ধরা পড়েছে। তিনি ফুসফুস এবং হূদযন্ত্রের সমস্যাও ভুগছেন। বাড়িতে অচেতন হয়ে পড়লে চলতি মাসের শুরুর দিকে মুম্বাইয়ের প্যারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মান্যতাকে। ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিত্সা দেওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তির এক দিন পর মান্যতার ফুসফুস থেকে পানি অপসারণের জন্য দুই ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচার করা হয়।
অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালে অচেতন মান্যতাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সঞ্জয়। সে সময় তাঁকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে যান হাসপাতালের কর্মচারীরা। তখন সঞ্জয় তাঁদের জানান, ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন তাঁর মা নার্গিস দত্ত। আর ব্রেন টিউমার কেড়ে নিয়েছিল তাঁর প্রথম স্ত্রী রিচা শর্মার জীবন। মান্যতাকে অচেতন অবস্থায় দেখার পর পুরোনো সে সব স্মৃতি মনে পড়ে যায় সঞ্জয়ের। আবেগকে ধরে রাখতে না পেরে অঝোর নয়নে কাঁদতে থাকেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সঞ্জয়কে। পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পেলেও বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে গত বছরের ২১ মার্চ সঞ্জয়কে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। গত ১৬ মে আদালতে আত্মসমর্পণের পর সঞ্জয়কে প্রথমে মুম্বাইয়ের আর্থার রোড কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ছয় দিন বন্দী থাকার পর তাঁকে ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এই মামলায় আগে দেড় বছর সাজা খেটেছেন সঞ্জয়। এই হিসাবে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত তাঁকে কারাবন্দী থাকতে হবে।