স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব শেষ হলো

পর্দা নামল আন্তর্জাতিক আন্তবিশ্ববিদ্যালয় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের নবম আসরের। গত মাসে শুরু হওয়া এ উৎসবে কয়েক দফায় প্রায় ২০০ চলচ্চিত্র প্রদর্শন শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার পুরস্কৃত করা হয় সেরা চলচ্চিত্র ও সেরা পরিচালককে। ৯৬টি দেশ থেকে ১ হাজার ৭০২টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এ উৎসবের প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনের জন্য জমা পড়ে।

উৎসবে জহির রায়হান সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে তেলেগু চলচ্চিত্র নিশিদি। এটির পরিচালক ভারতের জওহরলাল নেহরু টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কে ভি এম মাহেন্দ্র। এ ছাড়া টয় অপারেশন থিয়েটার চলচ্চিত্রের জন্য ‘তারেক মাসুদ সেরা উদীয়মান পরিচালক পুরস্কার’ পেয়েছেন বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ উল ইসলাম।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার বিতরণ পর্ব হয়। এর আগে সেখানে সেরা ১৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এসব চলচ্চিত্রের পরিচালকদেরও পুরস্কৃত করে এই উৎসবের আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ। উৎসবের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল প্রথম আলো

এর আগে তিনটি পর্বে ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে প্রায় ২০০ ছবির প্রদর্শনী হয়। চলচ্চিত্র উৎসবের স্লোগান ‘টেক ইয়োর ক্যামেরা, ফ্রেম ইয়োর ড্রিম’। ১৫ ও ২০ মিনিটের দুটি ক্যাটাগরিতে এসব চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে নির্বাচিত ডকুমেন্টারি, অ্যানিমেশন, ফিকশন এবং নন-ফিকশন চলচ্চিত্র ছিল।

উৎসবের প্রতিযোগিতা অংশের বিচারক ছিলেন পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ, চলচ্চিত্র গবেষক মঈনুদ্দীন খালেদ, বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের সভাপতি জাকির হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সাবেক সভাপতি রাশেদুল হাফিজ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে মানবতার ওপর যে ধরনের অত্যাচার হচ্ছে, সেটা কখনো প্রত্যাশিত ছিল না। একটি মানবিক বিশ্ব গড়তে তরুণদের স্বপ্ন বপন করে যেতে হবে। তাদের সৃজনশীল স্বপ্নই মানুষকে তাদের সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে বের করতে পারে।

প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, বহু আগে একজন স্বপ্ন দেখেছিলেন, একসময় ক্যামেরা কলম হয়ে যাবে। বছর দশেক আগে ইরানের এক চলচ্চিত্রকার বলেছিলেন, চলচ্চিত্র নির্মাণের এই পদ্ধতি ভেঙে যাবে। খুব সহজে তরুণেরা চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারবে। আশির দশকে তারেক মাসুদেরা যখন চলচ্চিত্র নির্মাণ করছিলেন, তখনো অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এখন তরুণদের এই অগ্রগতি দেখে খুব ভালো লাগছে। এভাবেই একসময় দেশের চলচ্চিত্র আরও উন্নত হবে।

এ সময় আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, ঢাকার পরিচালক ব্রুনো প্লাস, সূর্য দীঘল বাড়ির পরিচালক ‎মসিহউদ্দিন শাকের, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ, শাহ সিমেন্টের প্রকৌশলী তাসনুভা হায়দার প্রমুখ বক্তব্য দেন।