পর্দায় রানি ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে দাস আবদুল করিমের সেই বন্ধুত্ব

‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল’ ছবির দৃশ্য
‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল’ ছবির দৃশ্য

১৮৮৭ সাল। রানি ভিক্টোরিয়ার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে তৎকালীন ব্রিটিশ-ভারত থেকে দুজন সহকারী নেওয়া হয় তাঁর জন্য। আবদুল করিম তাঁদের একজন। আবদুল করিমের বয়স ২৪ বছর। অল্পদিনের মধ্যেই রানির প্রিয়ভাজন হয়ে ওঠেন তিনি। রানি যখন ভ্রমণে যেতেন, তখন তাঁর পরিবার এবং রাজপ্রতিনিধিদের আপত্তি সত্ত্বেও আবদুল করিমকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন।

রানির সঙ্গে তাঁর এই অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজপরিবারের অনেকে। এ নিয়ে অনেক গুঞ্জন ডালপালা মেলে। বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এই প্রেম নিয়ে বিতর্ক আর সমালোচনায় তোলপাড় হয় ভিক্টোরিয়ার জীবন।

‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল’ ছবির দৃশ্য
‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল’ ছবির দৃশ্য

সাধারণ মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ে সেই সংবাদ। প্রকাশ্যে আসতেই পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন রানি। ভিক্টোরিয়ার ছেলে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। রানির মৃত্যুর পর আবদুল করিমের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সব প্রমাণ নিশ্চিহ্ন করে দেন তাঁর ছেলে। আবদুল করিমের সঙ্গে রানি ভিক্টোরিয়ার সব ছবি আর চিঠি পুড়িয়ে দেন।

কিন্তু তাঁদের সম্পর্কের কথা পরে জানা যায় আবদুল করিমের লেখা ডায়েরি থেকে। ১৯০১ সালে রানি ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর পর ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় আবদুল করিমকে। এরপর বাকি জীবন তিনি আগ্রার কাছে একটি জায়গায় নিভৃতে বসবাস করেন, তার জন্য এ জায়গার বন্দোবস্ত করে দিয়ে যান রানি ভিক্টোরিয়া নিজেই। ১৯০৯ সালে ৪৬ বছর বয়সে মারা যান আবদুল করিম।

রানি ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে দাস আবদুল করিমের সেই গোপন বন্ধুত্ব নিয়ে ২০১০ সালে একটি বই লেখেন ভারতীয় লেখিকা শ্রাবণী বসু। বইয়ের নাম ‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল: দ্য ট্রু স্টোরি অব দ্য কুইন ক্লোজেস্ট’। সেই বইটি অবলম্বনে এবার চলচ্চিত্র তৈরি হলো। ছবির নাম ‘ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আবদুল’। পরিচালক স্টিফেন ফ্রেয়ারস। চিত্রনাট্য লিখেছেন লি হল। ভিক্টোরিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুডি ডেঞ্চ আর আবদুল করিমের চরিত্রে আলী ফজল। যুক্তরাজ্যে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর আর যুক্তরাষ্ট্রে ২২ সেপ্টেম্বর। ৬ অক্টোবর ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি।