প্রশংসা কুড়িয়েছে তুরঙ্গমী

নাচছেন পূজা সেনগুপ্ত
নাচছেন পূজা সেনগুপ্ত

নাচতে যে ভালোবাসে, সারা পৃথিবীই তো তাঁর উঠোন। যে কোনো মঞ্চে আলো ছড়াতে সক্ষম সে। ‘তুরঙ্গমী’ নামের দলটি সেটা প্রমাণ করে ফিরেছে। বাংলার তরুণদের এ নাচের দলটিকে নিয়ে সবাই কেন কথা বলে, সেটা আবারও প্রমাণ করেছে দলের মেধাবী নৃত্যশিল্পীরা। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ডাক পাওয়া, সেখান থেকে সুনাম কুড়িয়ে ফেরার পর তাঁদের সেই সফরটির কথা সবার জানা দরকার।
জুন মাসে আমন্ত্রণ পেলেন পূজা। দল নিয়ে যেতে হবে হো চি মিনের দেশে। সেখানকার নিন-বিনে বসবে আন্তর্জাতিক নাচের উৎসব। আরও ১৩ দেশ থেকে যাবে দেশগুলোর সেরা নাচের দলগুলো। রীতিমতো প্রতিযোগিতা করে টেকা দল!পূজার পাঠানো ভিডিও ভালো লেগেছিল আয়োজকদের। ভিয়েতনামের সংস্কৃতি, যুব ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তাই চেয়েছে বাংলাদেমের তুরঙ্গমী তাদের অনামিকা সাগরকন্যা এবং রিসল্যুশন নিয়ে এই উৎসব মঞ্চে উঠুক। প্রথমটি তুরঙ্গমীর নৃত্যনাট্য, পরেরটি অ্যানিমেশন ডান্স। বাংলাদেশের নৃত্যপ্রেমীরা দুটোই উপভোগ করেছেন ইতিমধ্যে। এ দুই প্রযোজনায় অবশ্য তুরঙ্গমীর নৃত্যসফর শেষ হয়নি। থানহোয়া রাজ্যের ল্যামসন থিয়েটারে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হয়েছিল তাদের। সেখানে সম্বল হয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। নজরুলের ‘আমি পুরব দেশের পুরোনারী’ গানের সঙ্গে পুরো দল আর রবীঠাকুরের ‘প্রার্থণা’ কবিতার সঙ্গে একা নাচ করেন দলনেতা পূজা সেনগুপ্ত।
কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? নাচের কথা সব সময় হয় বলে, অন্য কথা আগে বললেন পূজা। ‘খুব ইচ্ছে ছিল হো চি মিনকে দেখব, মানে তাঁর মমি। সেটা আমাদের সফরের অংশ ছিল না। আয়োজকদের বললাম, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রেসিডেন্টকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই। ব্যস, তারা রাজি হয়ে গেল। সবাই মিলে গেলাম হো চি মিনের মমিকে শ্রদ্ধা জানাতে।’ শুধু তাই নয়, দল নিয়ে তাঁরা ঘুরে এসেছেন বিশ্বসংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী ট্র্যাঙ অ্যানে। নৌকায় করে অন্ধকার গুহাদর্শন! পর্যটকেরা গেলে সেসব বেশ আগ্রহ নিয়ে দেখে।
পূজাদের এই দলে ছিলেন নৃত্যশিল্পী মো. ফরহাদ আহমেদ, শ্রেয়শী সেনগুপ্ত, ইয়াসনা রহমান, রুহি আফসানা আর মালয়েশিয়া থেকে যোগ দিয়েছেন দলের আরেক শিল্পী আনিকা হক। আলো, রূপসজ্জা, আলোকচিত্র, আলোকপ্রক্ষেপনে ছিলেন পলাশ হেনরি সেন, হাসান উদ্দিন সানি, মো. মিন্টু, মো. ইসমাইল হোসেন শেখ। পূজা জানালেন, সমালোচকেরা বাংলাদেশের নাচ পছন্দ করেছে। চারটি দেশকে সনদ দিয়েছে তারা। বাংলাদেশ সে দেশগুলোর একটি।
এ মাসেই ভারতের ‘দিল্লি ইন্টারন্যাশনাল আর্ট ফেস্টিভ্যাল’-এ যোগ দিতে যাচ্ছে তুরঙ্গমী। সেখানে তারা মঞ্চে তুলবে ‘ওয়াটারনেস’। এ যাত্রায় দলটির পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। ১৪ নভেম্বর দিল্লিতে পরিবেশনার জন্য তুরঙ্গমীর প্রস্তুতি প্রায় শেষ।