আবারও ধন্যবাদ ফেরদৌস ও পূর্ণিমা

মঞ্চেও দুই উপস্থাপক পূর্ণিমা ও ফেরদৌস দেখালেন নাগিন নৃত্য
মঞ্চেও দুই উপস্থাপক পূর্ণিমা ও ফেরদৌস দেখালেন নাগিন নৃত্য

কে বা কারা হবেন ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, প্রতিবছর অনুষ্ঠানের আগে দর্শকদের আগ্রহের চোখ পড়ে থাকে সেদিকেই। অনুষ্ঠান শুরুর আগ পর্যন্ত এটি নিয়ে থাকে ধোঁয়াশা। তবে গত বছর ফেরদৌস আর পূর্ণিমার দুর্দান্ত উপস্থাপনার পর একটা অলিখিত ঘোষণাও হয়ে গিয়েছিল যে এই দুজনই হবেন মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৭-এর কান্ডারি। যদিও সেই সিদ্ধান্ত এই আয়োজন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই শুধু জানতেন। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। দিনক্ষণও এগিয়ে আসছে। ফেরদৌস ও পূর্ণিমাও জানেন যে তাঁরাই করছেন উপস্থাপনা। অনুষ্ঠানের দুই মাস আগে দুজনের সঙ্গে বসে একটা পরিকল্পনাও হয়ে গেল যে কীভাবে এবারের আয়োজনে তাঁদের উপস্থাপন করা হবে। কিন্তু ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে আমার মুঠোফোনে পূর্ণিমার পাঠানো একটি খুদে বার্তা এল ‘আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, এবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার আয়োজনে উপস্থাপনা করতে পারছি না। যেকোনো কারণেই হোক, আমার আগ্রহ কমে গেছে। আমাকে ক্ষমা করবেন।’ এমন সময় এই খুদে বার্তা, যখন অন্য কোনো পথ নেই ফেরদৌস-পূর্ণিমা থেকে সরে আসার।

পূর্ণিমাকে ফোন করি। তিনি ফোন ধরেন না। আনিসুল হককে জানাই। ফেরদৌসকেও জানাই। বিকেলে আবার তাঁকে ফোন করি। এবার তাঁকে পাই। ‘আমি আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাচ্ছি না’—পূর্ণিমার একটাই কথা। আমিও নাছোড়বান্দা, ‘আপনাকে ছাড়া হবে না।’ ফেরদৌসসহ আবার আমরা বসি। পূর্ণিমা তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। আমাদের পরিকল্পনা আগায়। এবার দুজনেই আরও বেশি খুঁতখুঁতে। তাই প্রতিদিনই চলে পরিবর্তন, পরিবর্ধন। ফেরদৌসের আগমনী মিউজিকে জুড়ে দিই আট লাইনের র‍্যাপ গান। তিনি কখনো গান করেননি। কিন্তু এই আট লাইন তাঁকেই গাইতে হবে। ফেরদৌসের ‘না’ নেই। তিনি চলে এলেন স্টুডিওতে। কণ্ঠ দিলেন। নাচের মহড়ায় অংশ নিতে ছুটে গেলেন নিকেতনের ইগল ড্যান্স গ্রুপের একাডেমিতে। সকাল, বিকেল, রাত এক করে ফেললেন। কারণ নাচটাও খারাপ করা যাবে না। কম যান না পূর্ণিমাও। তিনিও চাইছেন নাচটা গতবারের চেয়ে ভালো হোক। মিউজিক করানো হলো। কিন্তু পূর্ণিমার পছন্দ নয়। তাই তাঁর পরামর্শে আবারও মিউজিকে পরিবর্তন। নাচ নিয়ে ফেরদৌস ও পূর্ণিমার মধ্যে চলল অলিখিত প্রতিযোগিতা।

গতবার পূর্ণিমার কৃত্তিম সংবাদ পাঠ খুব হিট। ভাইরালও হয়ে গিয়েছিল। এবারও তেমন একটা কিছু রাখার পরিকল্পনা। চিত্রনাট্য তৈরি হলো। শুটিংয়ের সময়ও দিলেন পূর্ণিমা। মিরপুরের একটি স্কুলে রাত অবধি শুটিংও হলো। কিন্তু সম্পাদনার পর মনে হলো, খুব বেশি ভালো হয়নি। পূর্ণিমা বললেন, ‘এটা দেওয়া যাবে না। ফেলে দিন।’ ফেরদৌসও সায় দিলেন। আমিও চিত্রনাট্য থেকে অনুকরণ পর্ব বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু এমন কিছু না থাকলে জমবে না। তাই পূর্ণিমা বললেন, রেকর্ডেড নয়, তিনি মঞ্চেই লাইভ মিমিক্রি করবেন। তিন দিন ধরে পাশাপাশি চলল স্ক্রিপ্ট ও নাচের মহড়া।

এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মঞ্চ আলোকিত হয়। প্রথমে আসেন ফেরদৌস। এরপর পূর্ণিমা। সেই রাতে উপস্থিত দর্শক আবারও ফেরদৌস-পূর্ণিমায় হলেন মোহিত—কি নাচ, কি উপস্থাপনায়। তাঁদের চমত্কার রসায়ন মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৭ আয়োজনটি করে তুলেছিল আরও আলোকিত। ধন্যবাদ ফেরদৌস। ধন্যবাদ পূর্ণিমা।