বহুদিন পর ফিডব‍্যাকের সঙ্গে গাইলেন মাকসুদ

বহুদিন পর সাবেক দল ফিডব্যাকের সঙ্গে গাইছেন মাকসুদ। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে বামবার কনসার্টে।  ছবি: প্রথম আলো
বহুদিন পর সাবেক দল ফিডব্যাকের সঙ্গে গাইছেন মাকসুদ। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে বামবার কনসার্টে। ছবি: প্রথম আলো

মাথায় লাল গামছা বাঁধা মাকসুদ উঠে এলেন মঞ্চে। নিজের দল নয়, নিজের ছেড়ে আসা দল ফিডব‍্যাক তখন মঞ্চে। বহু বছর পর এ দলটির সঙ্গে তিনি গাইলেন ‘চোখ’ গানটি। নব্বইয়ের দশকের মতো মাকসুদের পাশে গিটারে লাবু রহমান, কি-বোর্ড বাজিয়েছেন ফুয়াদ নাসের বাবু। বামবার বদৌলতে বহু কাল পর একসঙ্গে মঞ্চে দেখা গেল তাঁদের।

গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ছিল কনসার্ট ‘বামবা লাইভ চ‍্যাপ্টার ওয়ান’। দুপুর থেকে বসুন্ধরার নবরাত্রি মিলনায়তনে শুরু হয় দেশের ব্যান্ডের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশন (বামবা) আয়োজিত এ কনসার্ট। শুরুতে মঞ্চে পরিবেশনা নিয়ে আসে গানের দল শূন‍্য, পেন্টাগন, মাকসুদ ও ঢাকা, মাইলস।

১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বামবা। সে বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যার্থে তারা আয়োজন করে কনসার্ট ‘ফ্লাড এইড, ৮৭ ’। এরপর ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তারা ছিল দারুণ সক্রিয়। এরপরেও নিয়মিত কনসার্টের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। বর্তমানে সংগঠনটির নিবন্ধিত সদস‍্য ২৮টি ব‍্যান্ড। তাদের মধ্যে এ কনসার্টে গান করেছে ১১টি দল। এ দলগুলোর বহু গান ছিল সে সময়ের তরুণদের প্রিয়। ব‍্যান্ডগুলোর অনুপ্রেরণায় পরে নতুন ব‍্যান্ড গঠন করেছেন বহু তরুণ।

বামবার সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলম টিপু সংগঠনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের পর আরও বেশ কিছু কনসার্ট করব আমরা। সেগুলো হবে ইনডোরে। পরে পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে আউটডোরে কনসার্ট করার কথা ভাবব।’

গতকাল নিজেদের সব থেকে জনপ্রিয় গানগুলো নিয়েই মঞ্চে উঠেছিল দলগুলো। দলছুট পরিবেশনা শুরু করে ‘আমি তোমাকেই বলে দেব’ গানটি দিয়ে। মঞ্চের নেপথ্যে সে সময় বড় পর্দায় ছবি হয়ে উপস্থিত ছিলেন গানটির লেখক সঞ্জীব চৌধুরী। তাঁর কণ্ঠেই দারুণ জনপ্রিয়তা পায় দলছুটের এই গান। দলের ভোকাল বাপ্পা মজুমদার একে একে আরও গেয়ে শোনান ‘পরী’, ‘দিন বাড়ি যায়’, ‘বায়ান্ন তাস’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’ গানগুলো। ফিডব‍্যাক গেয়ে শোনায় ‘নিঝুম রোদে’, ‘উদাসী মনে’, ‘মনে হয়’, ‘মৌসুমী’, ‘বন্ধুর খোঁজ’ ও ‘মেলা’ গানটি। অর্থহীন গেয়ে শোনায় ‘অদ্ভুত ছেলেটি’, ‘চাইতেই পারো’সহ আরও কয়েকটি গান। ওয়ারফেজ গেয়ে শোনায় ‘হতাশা’, ‘পূর্ণতা’, ‘অসামাজিক’, ‘যত দূরে’, ‘মহারাজ’, ‘বসে আছি’ গানগুলো। ভাইকিংস শোনায় ‘রাত্রির ঘুম’, ‘এলোমেলো ক্রমশ’, ‘ভালোবাসি যারে’, ‘কথা দাও’, ‘অপেক্ষা’ গানগুলো।

দুপুর থেকে কনসার্টে দর্শক-শ্রোতার সংখ‍্যা ছিল খানিকটা কম। অনলাইনে আবেদনের মাধ‍্যমে কনসার্টে প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়েছিল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল ও সন্ধ্যা নামলে দর্শক বাড়তে থাকে। কনসার্টের শেষ দিকে পরিবেশনা নিয়ে আসে আরবোভাইরাস ও নেমেসিস। শুধু গানই নয়, কনসার্টে ছিল একটি নাতিদীর্ঘ লেজার শো। কনসার্টের রেডিও পার্টনার ছিল এবিসি।